সুরকার আলাউদ্দিন আলী মারা গেছেন

গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলীদেশের বরেণ্য গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলী মারা গেছেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টার পর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সাবেক আয়েশা মেমোরিয়াল) মৃত্যুবরণ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।

গীতিকার ও সুরকার আলাউদ্দিন আলীর মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার ভোর পৌনে পাঁচটায় আলাউদ্দিন আলীকে হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবার। এসময় শ্বাসকষ্টের তীব্র সমস্যা থাকায় চিকিৎসকরা তাকে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে আলাউদ্দিন আলী ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণসহ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন। ক্যান্সারেও আক্রান্ত তিনি।

২০১৫ সালের ৩ জুলাই এক পরীক্ষায় তার ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে। বাংলাদেশ ও ব্যাংককে তার চিকিৎসা হয়েছে। সাভারে সেন্টার ফর রিহ্যাবিলিটেশন অব প্যারালাইজড কেন্দ্রেও চিকিৎসা নিয়েছিলেন দীর্ঘদিন।

আলাউদ্দিন আলী বাংলাদেশের বরেণ্য সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গীতিকার। এ পর্যন্ত ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

এর মধ্যে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার পুরস্কৃত হয়ে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। যে রেকর্ড আজও কেউ ভাঙতে পারেনি।

আলাউদ্দিন ১৯৭৫ সালে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৯), সুন্দরী (১৯৮০), কসাই এবং যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৮৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত পদ্মা নদীর মাঝি চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।

আলাউদ্দিন আলীর উল্লেখযোগ্য কিছু গান হলো:
* যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়

একবার যদি কেউ ভালোবাসতো
ভালোবাসা যতো বড়ো জীবন তত বড় নয়
প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ
হয় যদি বদনাম হোক আরো
দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়
সুখে থাকো, ও আমার নন্দিনী হয়ে কারও ঘরনি
আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার
বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম দেখা পাইলাম না
সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ
এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়
যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে, মনে হয় এ দেহে প্রাণ আছে
আমায় গেঁথে দাওনা মাগো, একটা পলাশ ফুলের মালা
সবাই বলে বয়স বাড়ে, আমি বলি কমে রে
কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না
শত জনমের স্বপ্ন তুমি আমার জীবনে এলে
জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো
পারি না ভুলে যেতে, স্মৃতিরা মালা গেঁথে
হায়রে কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ
আমার মনের ভেতর অনেক জ্বালা

এছাড়া ১৯৮৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তার সুর করা গানের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি।

Share this post

scroll to top