বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা- বিটিআরসি দেশের ৫৮টি অনলাইন পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
রোববার বিকালে দেশের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) এবং ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে (আইএসপি) বিটিআরসি লিখিতভাবে এই নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানান ইন্টারনেট সেবা সংস্থাগুলোর সংগঠন আইএসপির মহাসচিব ইমদাদুল হক।
যেসব পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ এসেছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রিয় ডটকম, রাইজিংবিডিডটকম, পরিবর্তনডটকম, শীর্ষনিউজ২৪ডটকম, ঢাকাটাইমস২৪ডটকম ইত্যাদি।
“রাষ্ট্রবিরোধী সেইসাথে অশ্লীল খবর প্রচারের কারণে পোর্টালগুলোর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে এমনটাই জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক।
তবে কোন পোর্টালের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ এসেছে – সেটা তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই বলেননি।
কী কারণে পোর্টালগুলোর বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে – সে ব্যাপারে আইএসপির মহাসচিব ইমদাদুল হকও স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেনি।
বিবিসিকে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে কেবল নির্দেশনা এসেছে, সেখানে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।”
ইমদাদুল হক বিবিসিকে জানান, বিটিআরটিসির পক্ষ থেকে গতকাল বিকেলে তাদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে ওই ৫৮টি সাইট বন্ধের নির্দেশ আসে।
তারপর থেকে তারা সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
তবে আজ দুপুর পর্যন্ত ওই তালিকার বেশিরভাগ পোর্টাল সক্রিয় অবস্থায় দেখা যায়।
এ ব্যাপারে ইমদাদুল হক জানান, “এতোগুলো পোর্টাল বন্ধ করা টেকনিক্যালভাবে জটিল। তাই এই কাজ কিছুটা সময় সাপেক্ষ।”
তবে আজ রাতের মধ্যেই তালিকাভুক্ত সব পোর্টাল পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে বলে জানান তিনি।
অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করা হয় কেন?
সাধারণত কোনো সংবাদমাধ্যম যদি রাষ্ট্রবিরোধী কিছু প্রচার করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
“সেই সিদ্ধান্ত দেশের জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র- এনটিএমসি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে নিয়ে থাকে,” জানান ইমদাদুল হক।
তিনি বলেন, “এসব সাইট বন্ধের ক্ষেত্রে বিটিআরসি সরাসরি কোনো নির্দেশনা দেয় না। সিদ্ধান্ত মূলত এনটিএমসি নিয়ে থাকে। যেখানে আর্মি পুলিশ যৌথভাবে পোর্টালগুলো পর্যবেক্ষণ করে।”
পোর্টালের সম্পাদকরা ‘হতাশ’
এ ঘটনায় তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রিয় ডটকমের সম্পাদক জাকারিয়া স্বপন।
বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, “এই পোর্টাল বন্ধের বিষয়ে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি।”
স্বপন বলেন, “আমি সকালে এসে দেখি পোর্টাল চলছে না, বন্ধ হয়ে গেছে। এমনটা কেন হলো, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী – কিছুই জানি না।”
“আমরা হতাশ, হেল্পলেস।”
এ ঘটনাকে “সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বড় বাঁধা” বলে মনে করছেন তিনি।
এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে জনবল কাজ করছে তাদের ভবিষ্যত নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন জাকারিয়া স্বপন।