অধিকাংশ মানুষের স্বপ্ন বা বাসনা থাকে কিছু একটা করার। হোক সেটা নিজের জন্য কিংবা সমাজের জন্য। তবে সমাজের জন্য নিঃস্বার্থভাবে যারা কাজ করে তাদের সংখ্যা সীমিত। সেই সীমিত সংখ্যার একজন হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নের খাদইল গ্রামের গাছপ্রেমিক মোস্তাফিজুর রহমান। যিনি সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে নিঃস্বার্থভাবে পরিবেশ রক্ষা ও জনকল্যাণমূলক কাজ করে ইতোমধ্যে এলাকায় সুনাম অর্জন করেছেন। পরিবেশ রক্ষায় নিজের ইউনিয়নের বিভিন্ন কাঁচা ও পাকা রাস্তায় তালগাছ রোপন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার তালগাছ রোপন করেছেন এই গাছপ্রেমিক। এছাড়াও সুযোগ পেলেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান এবং পতিত জমিতে হরেক রকম ফলজ গাছ রোপন করে থাকেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোস্তাফিজুর রহমানের রোপন করা ছোট বড় হাজার হাজার তালগাছ এলাকার বিভিন্ন রাস্তার দু-ধারে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যা যেকোন পথচারীকে মুগ্ধ করে। প্রথমে শখের বশে এ কাজ শুরু করলেও পরে তা নেশায় পরিণত হয়। মৃত্যু পরবর্তী তার ভাল কাজের কিছু স্মৃতি রেখে যাওয়াই তার এসব কাজের মুখ্য উদ্দেশ্য বলে জানা যায়। শুধু যে গাছ লাগানোর মধ্যেই তিনি সীমাবদ্ধ তা নয়; বরং সমাজের অবহেলিত মানুষকেও নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে এলাকার মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। শিক্ষা প্রসারেও তিনি ভূমিকা রেখে চলেছেন। বর্তমানে নিজ এলাকায় তার তত্ত্বাবধানে একটি কেজি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। শুরুতে তার এসব কাজে এলাকার মানুষ অতটা গুরুত্ব না দিলেও এখন সবাই তাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানায়।
ইতোমধ্যেই তিনি এলাকায় একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে এসব জনহিতকর কাজগুলো পরিচালনার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে প্রশংসিত হলেও, এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রের কোনো সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠান হতে কোনো স্বীকৃতি বা সম্মাননা পাননি। এতে তার তেমন আক্ষেপ না থাকলেও, ভালো কাজের যেকোনো স্বীকৃতি আরো বেশি বেশি জনহিতকর কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। সরকারি ও বেসরকারি ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভবিষ্যতে পরিবেশ উন্নয়ন ও সমাজসেবায় আরো ব্যাপকভাবে কর্মকান্ড পরিচালনায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করবেন বলে সাদা মনের এই মানুষটি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।