ঘুষের মামলায় সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদাকে জামিন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ মামলায় তিনি চার বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন।
সাজার রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার লিভ টু আপিল গ্রহণ করে আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ তাকে জামিন দেয়।
আদালতে নাজমুল হুদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, মনসুরুল হক চৌধুরী ও নাজমুল হুদার স্ত্রী সিগমা হুদা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
খুরশীদ আলম খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনার (নাজমুল হুদা) লিভ টু আপিল মঞ্জুর হয়েছে। সেইসাথে জামিনও দিয়েছে আদালত। এখন আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন।’
২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এ মামলায় নাজমুল হুদাকে সাত বছরের সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। ২০১৭ সালে হাই কোর্ট তার সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।
নির্বাচনের আগে গতবছর ১৯ নভেম্বর হাই কোর্টের ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
সে অনুযায়ী গত ৬ জানুয়ারি নাজমুল হুদা আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এইচ এম রুহুল ইমরান।
এদিকে ৮ জানুয়ারি হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) পাশাপাশি জামিনের আবেদন করেন নাজমুল হুদা।
চেম্বার বিচারপতি মো: নূরুজ্জামান সেদিন বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার শুনানি শেষে নাজমুল হুদাকে জামিন দিল আপিল বিভাগ।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো: শরিফুল ইসলাম ধানমণ্ডি থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
বিএনপি সরকারের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদার ২০১০ সাল থেকে দলের সাথে টানাপোড়েন শুরু হয়। দল তাকে বহিষ্কার করে। সেই বহিষ্কারের আদেশের পরও বিএনপির পরিচয়েই রাজনীতিতে থাকার চেষ্টা করেন। তবে ২০১২ সালের জুনে তিনি নিজে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানান। নাজমুল হুদার সর্বশেষ গঠিত দল ‘তৃণমূল বিএনপি’।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেন। তবে এই জোট থেকে তিনি মনোনয়ন পাননি। পরে ঢাকা-১৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন তিনি।