আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছে বিএনপি। তারা আন্দোলনের নামে হাক-ডাক দিচ্ছে।
শনিবার দুপুরে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগদানের আগে ফেনী সার্কিট হাউজে মতবিনিময়কালে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার দলের নেতা ও স্বজনরা তার অসুস্থতা নিয়ে যে চিত্র তুলে ধরেন, চিকিৎসকদের অবজারভেশন তেমন নয়। ওনার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তারা যতটা না উদ্বিগ্ন, তার চেয়ে এ অসুস্থতা নিয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ হাসিল করতে চায়। এটা নিয়ে তাদের দুরভিসন্ধি রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুবছর হয়ে গেছে তিনি কারাগারে, বিএনপি খালেদার জিয়ার মুক্তির জন্য চোখেপড়ার মতো কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। তারা আন্দোলন করে তাদের নেত্রীকে কারামুক্ত করতে পারলে করুক, আমার আপত্তি নেই। তারা আন্দোলন করতে পারে না।
চলমান শুদ্ধি অভিযান নিয়ে মন্ত্রী বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে কোনো দেশে দলীয় সরকার তাদের দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করেছে বলে আমার জানা নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিরল হয়ে রইবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন অপরাধ করলে নিজের দলেরও কোনো ছাড় নেই। শেখ হাসিনা সৎ সাহস দেখিয়েছেন বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যেই দুর্নীতি করুক, এটা সরকারের নজরে আছে, সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। দুদক আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্যের দুর্নীতি তদন্ত করছে।
কানাডার আদালত রায় দিয়েছে যে বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল, তাদের নেতা বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় থাকতে পারে না। বিএনপি নিজেদের দলের কোনো লোকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। আর বিএনপির আমলে দেশে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি।
জয়নাল হাজারীর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হওয়ার আলোচনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সুনিদির্ষ্টভাবে কিছু বলতে পারছি না, সভাপতি নির্দেশ দিলে সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি যাওয়ার কথা। কিন্তু আমি কোনো চিঠি দেইনি।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের চলে যেতে হবে, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে, ক্রমাগত বাড়ছে। চীন, ভারত থেকে চাপ আসছে। সব দিক থেকে মিয়ানমার সরকার চাপে রয়েছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করতে হবে। যারা বিতর্কিত, যাদের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ আছে তাদের বাদ দিতে হবে। কয়েক এমপিসহ অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আমরা ফ্রেশ ব্লাড চাই।
সাধারণ সম্পাদক বলেন, দল করলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। দু-চারজনের শৃঙ্খলাবিরোধী অপকর্মের জন্য গোটা প্রতিষ্ঠান দায়ী হতে পারে না। এই প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য ত্যাগী নেতাকর্মী রয়েছে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে অবশ্যই তাদের নেতৃত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক পানি সম্পদ মন্ত্রাণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম,ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী,জেলা আওয়ামী লীগের প্রধান উপদেষ্টা আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম,জেলা কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান বিকম,ফেনীর পৌর সভার মেয়র হাজী আলা উদ্দিন,জেলা কমিটির নেতা শেখ আবদুল্যা,নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী প্রমুখ।