বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার উদাসীন। শুধু তাই নয়, ডেঙ্গু নিধনে সিটি করপোরেশন ‘মশার ঘুমের ওষুধ’ এনেছে। বৃহস্পতিবার সকালে বেইলি রোড়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি লিফলেট বিতরণকালে সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন। জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বেইলি রোড়ে ফুটপাতের দুই পাশের বিপনী বিতান ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের সামনে বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের কাছে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ের ওপর দলের লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময়ে জাসাসের বাবুল আহমেদ, আহসানউল্লাহ চৌধুরী, মীর সানাউল হক, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, জাহাঙ্গীর আলম রিপন, জাহিদুল আলম হিটু, জাকির হোসেন রোকন, শিবা সানু, রমনা বিএনপির নাদিম চৌধুরী প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন যে, ডেঙ্গুর জন্যে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে। কী ব্যবস্থা নি্য়েছেন? আপনার সিটি করপোরেশন কী ব্যবস্থা নিয়েছে? সিটি করপোরেশন তো এখানে অনেকধরনের কথা বলে্ছে, তামাশামূলক কথা-বার্তা বলেছে। কারণ তাদের এটা ফাইট করার জন্য মশা মারার যে ওষুধগুলো দরকার সেটা ছিলো না। তারা কোটি কোটি টাকা দিয়ে যে ওষুধ নিয়ে এসেছে সেটা হচ্ছে- মশার ঘুমের ওষুধ, মশা কিছুক্ষন ঘুমিয়ে থাকবে শান্তির মধ্যে সেই ওষুধ । প্রকৃতপক্ষে মশা নির্মূল হবে, নিধন হবে সেই ওষুধ নেয়নি। সেটা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে এটা প্রমা্ণিত হয়েছে।
রিজভী বলেন, আজকে দুযোর্গ-দুর্বিপাক এই মহামারীতে একেবারে উদাসীন হচ্ছে এই সরকার। গণবিরোধী সরকার এই ধরনের চরিত্র ধারণ করতে পারে। সরকার ডেঙ্গু প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়নি বরং এখনো মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে খেলা করছে।
জনগনকে আমরা সব দিক থেকে সচেতন করার চেষ্টা করছি, আমরা মানুষ বলছি যে আপনারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার আগেই আপনারা সর্তক থাকুন এবং এজন্য কী কী করণীয় সেটা ডাক্তাররা সুস্পষ্টাভাবে বলেছেন সেটাই আমরা এই লিফলেটের মধ্যে বলেছি।
ডেঙ্গু নিয়ে গণমাধ্যম আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সরকার প্রধানের এরকম বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা ব্যর্থ হয় তাদের মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়, যারা জনকল্যাণের মধ্যে থাকে না তাদেরকে অসত্যের ওপর, মিথ্যার ওপর, বিভ্রান্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। কারণ নিজেরাই হচ্ছে ভোটারবিহীন একটি সরকার। এই কারণে তারা মিডিয়ার বিরুদ্ধে বলছে।
গণমাধ্যমই একমাত্র প্রতিচ্ছবি, একমাত্র আয়না যেখানে সমাজের নানা অসঙ্গতি ফুটে উঠবে। এটাই হচ্ছে প্রকৃত গণমাধ্যমের বৈশিষ্ট। সেই কাজগুলো গণমাধ্যম করছেন। যখন সত্য উচ্চারিত হবে তখন মিথ্যাবাদীরা ভয় পাবে, এই ভয় থেকে তারা মিডিয়ার বিরুদ্ধে বলেছে।
রিজভী বলেন, আমরা সব সময় বলি, প্রাকৃতিক দুযোর্গের একটা সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। আপনারা দে্খেছেন আমরা বন্যা উপদ্রুত এলাকায় মানুষের জন্য ত্রান নিয়ে যেতে দেয় না। ওরা মনে করে যে, তাদের এটাতে ক্ষতি হয়ে থাকবে, বিরোধী দল আসলে তাদের ক্রেডিভেলিটি থাকবে না। এই ভয় থেকেই তারা এই কাজ করে। তাদের যে ফাঁকি যেটা আছে, তাদের যে ব্যর্থতা আছে, এই ব্যর্থতা ঢাকার জন্য তারা সমন্বিত উদ্যোগ নিতে চায় না, যৌথভাবে এই মহামারী বলুন, প্রাকৃতিক দুযোর্গ বলুন-এটা সরকার মোকাবিলা করতে চায় না।
ডেঙ্গু মহামারী প্রতিরোধে বিএনপি সমন্বিত উদ্যোগ চায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।