আইনমন্ত্রীর পদে থাকার অধিকার নেই : খোকন

জাতিসঙ্ঘের একটি সভায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে মিথ্যাচার ও গুম-খুনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সঠিত তথ্য না দেয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের শপথ ভঙ্গ হয়েছে এবং এ কারণে তার স্বপদে থাকার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে রোববার সুপ্রিম কোর্টে আইন, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি তোলেন।

মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতিসঙ্ঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির (কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার) সভায় যে বক্তব্য ও প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তার সাথে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতির কোন মিল নেই। তিনি অবাস্তব বক্তব্য প্রদান করেছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মিথ্যাচার করেছেন। আমি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসেবে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘প্রকৃতপক্ষে কাগজে কলমে দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলা থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার লেখা বইয়ে ও কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার আবেদনে বলেছেন, সরকারের পক্ষে সরকারের কথায় ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় না দেয়ায় তাকে জোরপূর্বক অসুস্থ বানিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য ও প্রধান বিচারপতির আসন থেকে পদত্যাগে রাষ্ট্র কর্তৃক বাধ্য করা হয়েছে। এছাড়াও বিচারকরা যেন সরকারের কথায় রায় দেয় এরই উদ্দেশ্যে বিচারকদের মনে ভীতি সঞ্চারের অভিপ্রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

যে দেশের একজন প্রধান বিচারপতি ন্যায় বিচার পায় না সে দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কতটুকু প্রশ্নবিদ্ধ তা দেশের মানুষের জানা আছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রসঙ্গে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা আরও বলেন, ‘পুলিশ বিভাগ সরকারের সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে এদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত মর্মে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। তাই জেনেভায় দেয়া তার বক্তব্য সত্যের অপলাপ এবং শপথ ভঙ্গের শামিল। তাই তার (আইনমন্ত্রী) পদে থাকার আর কোন অধিকার নেই।’

Share this post

scroll to top