তাইওয়ান প্রণালীতে ফরাসি যুদ্ধজাহাজ, চীনের উদ্বেগ

ফরাসি একটি যুদ্ধজাহাজ এ মাসে তাইওয়ানের কৌশলগত প্রণালী পাড়ি দিয়েছে। এক বিবৃতিতে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, ইউরোপীয় কোনো দেশের জাহাজ হিসেবে এই বিরল অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়াশিংটন। এ নিয়ে চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে বেইজিংয়ে।

এই পথ ব্যবহারের মাধ্যমে চীনকে একটি আভাস দেয়া হলো। চীনকে কেন্দ্র করে ক্রমেই আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে নৌবহরের স্বাধীনতা জোরদার করছে মার্কিন মিত্ররা। এর মাধ্যমে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো অন্যান্য মিত্রদেশও একই ধরনের অভিযান চালাতে পারে বলে ধারণা করছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যেই এ অভিযান পরিচালনা করল ফরাসিরা। যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কে স্পর্শকাতর ইস্যুগুলোর একটি তাইওয়ান, যেখানে চলছে বাণিজ্যযুদ্ধ। দক্ষিণ চীন সাগরে চলছে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আর চীনের বর্ধিষ্ণু সামরিক শক্তি প্রদর্শন। এখানে যুক্তরাষ্ট্রও স্বাধীনভাবে নৌবহর টহল পরিচালনা করতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তা জানান, ৬ এপ্রিল চীন ও তাইওয়ানের মধ্যবর্তী সরু সমুদ্রপথ অতিক্রম করেছে ফরাসি একটি সামরিক নৌযান। এক কর্মকর্তা বলেন, এটি ফরাসি রণতরী ভেনদেমায়ার। চীনের সেনাবাহিনী জাহাজটিকে অনুসরণ করেছে বলে জানায়। এর আগে তাইওয়ান প্রণালীতে ফরাসি সেনাবাহিনীর কোনো অভিযানের কথা তারা জানাতে পারেননি। এই নৌ অভিযানের ফলে ফ্রান্সের সাথে চীনের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে বলে জানান কর্মকর্তারা। চীনা নৌবাহিনীর ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত নৌ প্যারেডে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য দেশের রণতরী অংশ নিলেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ফ্রান্সকে। বৃহস্পতিবার চীন এক বিবৃতিতে জানায়, এই ‘অবৈধ’ অনুপ্রবেশের কারণে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ‘কঠোর অভিযোগ’ জানাবে তারা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রেন গোকিং বলেন, আইন ও নিয়ম মেনে নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠিয়েছে চীনের সেনাবাহিনী। তাদের চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। তবে অভিযানের কারণেই এ সপ্তাহের প্যারেডে ফ্রান্সের আমন্ত্রণ বাতিল করা হয়েছে কি না, সে প্রসঙ্গে কিছু বলেননি তিনি।

রেন গোকিং বলেন, চীনের সার্বভৌমত্ব আর নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সামরিক বাহিনী সদা তৎপর। ফ্রান্সের সামরিক বাহিনী প্রধানের মুখপাত্র কর্নেল প্যাট্রিক স্টেগার এ অভিযানের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গত মাসে তাইওয়ান প্রণালীতে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড জাহাজ পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানকে নিজেদের ভূ-সীমানার অংশ দাবি করা চীন এতে ক্ষুব্ধ হয়। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চেন চাং চি বলেন, ব্যস্ত আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথের অংশ তাইওয়ানের এই প্রণালী। ‘প্রয়োজনের তাগিদে’ যেকোনো দেশের জাহাজ এখানে প্রবেশ করতে পারে। এই এলাকায় বিদেশী সব জাহাজের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করবে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা অধিদফতর। তাইওয়ানের সাথে কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই ওয়াশিংটনের।

সূত্র : রয়টার্স

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top