স্বাধীনতার ইতিহাস সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায়কে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে বিদ্যাসাগর সোসাইটি আয়োজিত কথাসাহিত্যিক সোফিয়া হোসেন রচিত ‘বীর বীরাঙ্গনা’ উপন্যাসের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
একই সময় সরকারের পাশাপাশি দল মত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি ।

তিনি বলেন, ব্যক্তি পর্যায়ে এধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে আমরা সফলকাম হবো। স্বাধীনতার ইতিহাস ও চেতনা বাংলাদেশ এবং বহির্বিশ্বে প্রচারের সরকারি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা নষ্ট হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এগুলো পৌঁছানোর জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের সবচাইতে গৌরব ও অহংকারের অধ্যায়। বক্তব্যের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও বীর বীরাঙ্গনাদের অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের উপর এরকম নির্বিচার অত্যাচার কোনো মহাযুদ্ধেও হয়নি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত তাদের অপকর্মের সাফাই গাইতে শান্তির ধর্ম ইসলামকে ব্যবহার করেছে। তারা ইসলামের আদর্শ বিশ্বাস করে না। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় থাকাকালীন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত করেছেন।

মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরে বীরাঙ্গনাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি যুদ্ধশিশুদের পিতার নামের স্থানে নিজের নাম লেখানোর কথাও বলেছেন। জাতির পিতাকে হত্যার পরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের পরিচয় দিতেও সাহস পেতো না। বীরাঙ্গনারাও নিজেদের কষ্টের কথা মুখ খুলে কাউকে বলতে পারতো না।

সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। তাদের মর্যাদা প্রদানের সাথে সাথে জীবন ধারণের জন্য ভাতার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সমাজে যাতে তারা সম্মানের সহিত বাচতে পারে তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অপরদিকে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি তাদের সমবেদনা ও সম্মান না দিয়ে অপবাদ দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও অতিথিবৃন্দ বীর বীরাঙ্গনা উপন্যাসের মোড়ক উন্মোচন করেন।

বিদ্যাসাগর সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল হাই এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল প্রমুখ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top