মজাদার যতই খাবার হোক না কেন মাছ ও ভাত দু’একদিন না খেলে বাঙালির রসনা পূর্ণ হয় না। তেমনি ব্রিটেনের অধিকাংশ মানুষ রসনা পূর্ণ করে খাবারের আগে বা পরে অ্যালকোহল বা ওয়াইন পানের মাধ্যমে, বাংলায় যাকে বলে মদ। এই অ্যালকোহল ও ওয়াইনকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের গড়ে উঠেছে অসংখ্য পাব। পাবে শুধু অ্যালকোহল ও ওয়াইন ছাড়াও খাবারের ব্যবস্থা থাকায় ব্যবসায়ীরা বেশ ভাল লাভবান হতো।
কিন্তু সম্প্রতি ব্রিটেনের মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও সরকারের ট্যাক্স নীতি পরিবর্তনের কারণে পাবের ব্যবসায় হিমসিম খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। শুধু এ কারণেই গত বছর প্রায় ১ হাজার পাব বন্ধ হয়ে গেছে, গড়ে প্রতি মাসে যা প্রায় ৭৬টি।
রিয়েল এস্টেট কেম্পানি আলটোস গ্রুপের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ব্রিটেনের মানুষ ঘরের বাইরে গিয়ে কম খাওয়ার কারণে পাবে কম খরচ করেছে। এতে ব্রিটিশ কমিউনিটিতে প্রতি মাসে গড়ে ৭৬টি পাব বন্ধ হয়ে গেছে। তবে গত বছর ২০১৭ সালের তুলনায় কম পাব বন্ধ হয়েছে। উচ্চ বিজনেস রেটের কারণে ২০১৭ সালে প্রতি মাসে ১৩৮টি পাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
জরিপে আরো দেখা যায়, ২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার পাব বন্ধে হয়ে গেছে ব্রিটেনে। এ বিষয়ে আলটোস গ্রুপের মুখপাত্র অ্যালেক্স প্রবেন বলেন, সম্প্রতি সরকার পাবের বিজনেস রেট কমানোর কারণে ব্যবসায়ীদের কিছুটা উপকার হয়েছে। তাই ব্যবসায় ক্ষতি কম হওয়ায় পাব বন্ধের সংখ্যাও কমেছে।
এদিকে কী কারণে ব্রিটেনে পাবের সংখ্যা কমে যাচ্ছে তার কিছু কারণ নির্ধারণ করেছে ক্যাম্পেইন ফর রিয়েল এলে (কামরা) নামক প্রতিষ্ঠানটি। কামরা ১২৫টি শাখার মাধ্যমে সারা দেশে পাবে কী পরিমাণ অ্যালকোহল ও ওয়াইন বিক্রি হয় এবং মজুত থাকে তা পরিমাপ করে। পাবের সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে ব্রিটেনের যুবকরা আগের তুলনায় কম অ্যালকোহল গ্রহণ এবং সাধারণ মানুষ অর্থ সাশ্রয়ের জন্য বাড়িতে নিয়ে অ্যালকোহল গ্রহণ করাকে চিহ্নিত করেছে কামরা।
এছাড়া পাবের সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য অন্য যে তিনটি কারণ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে সেগুলো হচ্ছে, অ্যালকোহল বিক্রির জন্য সরকারকে উচ্চ মূল্যের ডিউটি প্রদান, ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) ও পাব পরিচালনার জন্য সরকারকে বিজনেস রেট প্রদান। আর উচ্চ মূল্যের বিজনেস রেটই ব্রিটেনের পাড়া মহল্লায় অসংখ্য পাব কমার অন্যতম কারণ বলে মনে করছে কামরা কর্তৃপক্ষ।