জমি আছে, বরাদ্দ আছে, ঠিকাদার কাজও শুরু করেছিল কিন্তু একটি মহলের স্বার্থের কারণে স্কুলের বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে না। ঘটনাটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ভেড়ভেড়ী মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
ভেড়ভেড়ী মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৪১ টাকা বরাদ্দ এসেছে। ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হলেও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে দিচ্ছে না এলাকার কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি। ভবন নির্মাণের জায়গায় লে-আউট দেয়া হলে এতে একটি মহল বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ১৯৪০ সালে একটি আধা পাকা বিল্ডিং স্থাপন করে ১একর ৮৬ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় ভেড়ভেড়ী মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরপর গত ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মিত হয়। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে প্রতিদিন গড়ে উপস্থিত থাকে ৪৩৯ জন শিক্ষার্থী।
ফলে জায়গা সংকুলানের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দুইটি শিফ্টে ও ১১টি শাখায় বিভক্ত করে কোনো রকমে পাঠদান করছেন। ফলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ১কোটি ১৫লাখ ৬৪১ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে পুটিমারী ভেড়ভেড়ী মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিলকিছ বেগম অভিযোগ করেন, এলাকার কয়েকজন শিক্ষাবিরোধী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি খেলার মাঠ রক্ষার নামে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের বিরোধীতা করে মানববন্ধন করাসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এটি তাদের ভবণ নির্মাণ বন্ধের পাঁয়তারা বলে জানান তারা।
তারা আরো বলেন, ভবনটির কাজ শুরু করা না হলে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরৎ যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটবে।
স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানান, স্কুলের নিজস্ব জায়গায় ও স্কুল সীমানার মধ্যেই ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদার খনন কাজ শুরু করেছে। কিন্তু একটি মহল ‘মাঠ নষ্ট’ হওয়ার দাবি করে ভবনের কাজ শুরু করতে দিচ্ছে না।
তারা আরো বলেন, ভবনটি হলে স্কুলের মাঠের কোনো ক্ষতি হবে না। তাছাড়া ভবনটি নির্মিত হলে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সুষ্ঠু পরিবেশসহ নিশ্চিত করাসহ শিক্ষার মান বাড়বে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী ভবনের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী কেরামত আলী নান্নু বলেন, স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ঠিকাদার কাজও শুরু করেছিল। কিন্তু এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি ভবন তৈরি না করতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ কারণে ঠিকাদার নির্মাণ সামগ্রীর জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে আসতে চাচ্ছে না। নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আসলে সেগুলো চুরি যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ঠিকাদার।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে অভিযোগকারীদের ভবণ নির্মাণ বন্ধের দাবির বিষয়ে কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাইনি। ভবন নির্মাণ কাজ কোনো কারণে বন্ধ হলে বরাদ্দ ফেরত যাবে এবং ওই বিদ্যালয়ে আর কোনো ভবন হবে না।