ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পুনের শিবাজি নগর এলাকার বাসিন্দা বিজয়প্রকাশ খন্দকার। ভারতের চলমান লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী তিনি। জীবনে কখনো কোনো নির্বাচনে জিততে পারেননি। আবার তািই বলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাও ছেড়ে দেননি তিনি। চলমান লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে গত দুই মাস ধরে ৭৩ বছর বয়সী এই ব্যক্তি এলাকায় ঘুরে-ঘুরে তার পক্ষে নির্বাচনী সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।
‘আমি জনগণকে দেখাতে চাই, পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রে দলীয় রাজনীতি একমাত্র উপায় নয়। আমি আমার মতো আরো স্বতন্ত্র প্রার্থী দেখতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা দুর্নীতি দূর করতে পারবো’,- বলছিলেন মি: খন্দকার।
তিনি যে সংসদীয় আসনে লড়ছেন সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩শে এপ্রিল মঙ্গলবার। গত ১১ই এপ্রিল ভারতের লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে। সাত দফায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়ে ভোট গণনা শুরু হবে আগামী ২৩শে মে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়া বিজয়প্রকাশ খন্দকার আশা করেন তিনি এক সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে তিনি প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিককে ১৭ হাজার করে রুপী দেবেন। তার মতে, অন্য জায়গায় খরচ কমালে এ অর্থ দেয়া কোনো কঠিন কাজ নয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়প্রকাশ খন্দকার ১৯৮০’র দশকের শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্র প্রদেশের বিদ্যুৎ সংস্থায় কাজ করেছেন। তবে মি. খন্দকারকে এখন দেখা যায় শহরজুড়ে একটি স্টিলের ঠেলাগাড়ি ঘুরতে দেখা যায়।
সে গাড়িতে তার নির্বাচনী প্রতীক লাগানো রয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে ‘বুট জুতার বিজয়’। কারণ তার নির্বাচনী প্রতীক বুট জুতা। তিনি যখন শহরজুড়ে এই ঠেলাগাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান তখন এটি এক মজার পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকেই তাকে উপেক্ষা করে। আবার অনেকে তার সাথে সেলফি তুলতে চায়।
মি: খন্দকার এখন পর্যন্ত ২৪টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচন। তবে নাম বিজয়প্রকাশ হলেও কোনো নির্বাচনেই একণ পর্যন্ত তিনি জয়লাভ করতে পারেননি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল তিন হাজার। এদের মধ্যে মাত্র তিনজন জয়লাভ করেছিল। ভারতের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছিল ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে। তখন ৫৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ভারতের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী যেসব প্রার্থী জাতীয় রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন পায় তাদের নাম ব্যালট পেপারের সবচেয়ে উপরের দিকে থাকে। এরপর থাকে প্রাদেশিক দলগুলোর প্রার্থীদের নাম। সর্বশেষ থাকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নাম।
নির্বাচনের জন্য বিজয়প্রকাশ খন্দকার তার ডাক নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রেখেছেন। তার নতুন নামের প্রথম অক্ষর শুরু হয়েছে ইংরেজি সর্বশেষ বর্ণ ‘জেড’ দিয়ে। ব্যাটল পেপারে নাম সবার শেষে রাখার জন্য তিনি নামের এ পরিবর্তন করেছেন।
‘ভোটারদের কাছে আবেদন হচ্ছে, ব্যালট পেপারে সর্বেশেষ প্রার্থীকে ভোট দিন,’ বলেন মি: খন্দকার। সূত্র : বিবিসি বাংলা।