ফেনীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মুকছুদ আলমের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহমদ এ আদেশ দেন।
নুসরাত হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমকে আজ সোমবার আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক (ওসি) মো: শাহ আলম। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে ১১ জন বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে রয়েছে। এদের মধ্যে গত ৯ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমদের আদালত নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরদিন ১০ এপ্রিল অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলার সাত দিন, আবছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালতের বিচারক। ১১ এপ্রিল উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহমদ। ১৩ এপ্রিল শনিবার মামলার আরেক আসামি জাবেদ হোসেনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাকির হোসাইন।
এদিকে, রোববার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, নুসরাত জাহান রাফি গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় গেলে কয়েকজন তাকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এতে মারাত্মক দগ্ধ হন নুসরাত। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু হয় তার।
এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
এর আগে ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
যৌন নিপীড়নের ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। ওই মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।