অপরাধ? বিবাহিত হয়েও প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন এই মহিলা। ভারতের মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলার একটি আদিবাসী প্রধান গ্রামের ওই মহিলাকে এই ‘গুরুতর’ অপরাধে বেধড়ক পেটালেন গ্রামবাসীরা। এখানেই শেষ নয়, গ্রামবাসীদের শাস্তির নিদান অনুযায়ী ২৭ বছর বয়সী ওই মহিলাকে নিজের স্বামীকে কাঁধে চাপিয়ে ঘুরতেও বাধ্য করা হয়। এই বর্বর ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার এই ঘটনার একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে যাতে দেখা যায়, ওই মহিলা তার স্বামীকে কাঁধে চাপিয়ে অতি কষ্টে হেঁটে চলেছেন। তাকে ঘিরে রয়েছে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। নানাভাবে ওই দলের পুরুষরা মহিলাকে হেনস্থার চেষ্টা করছেন। একজন বৃদ্ধ লোক মহিলার সামনে হাসতে হাসতে নাচতে থাকেন এবং অন্য একজন লাঠি দিয়ে ওই মহিলাকে পেটাতে থাকেন। স্বামীর ওজন বহন করতে করতে ক্লান্ত ওই মহিলা হাঁটতে পারছিলেন না।
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক দিন আগে দেবীগড়ে তার স্বামীর বাড়ি ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে গুজরাটে পালিয়ে যান এই মহিলা। তার স্বামী ও শ্বশুর দুই দিন আগে মহিলার সন্ধান পান এবং তাকে গতকালই তাকে দেবীগড়ে নিয়ে আসেন। গ্রামবাসীরা ওই মহিলাকে যে শাস্তি দেন তা হলো স্বামীকে কাঁধে চাপিয়ে বহন করতে আদেশ দেন তারা; চারপাশের মানুষ ঘটনার ভিডিও করে তা হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেন।
দেবীগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় দাওয়ার বলেন, “দশ দিন আগে ওই মহিলা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। গ্রামে ফিরে আসার পর মহিলাকে প্রায় ১০-১২ জন পুরুষ মিলে অপমান করে, ওর ওড়না ছিনিয়ে নেয়। আমরা চেষ্টা করছি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না হয়।” প্রায় ১২ জন মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
ঝাবুয়া গ্রামটি ভোপালের থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ঝাবুয়ার পুলিশ সুপার বিনীত জৈন বলেন, “একজন নারীকে প্রকাশ্যে নির্যাতন ও অপমান করা হয়েছে। এটা সত্যিই অমানবিক। আমি পুলিশ স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে সেখানে যেতে এবং ঘটনাকালে যে যে ওখানে উপস্থিত ছিলেন সকলকে পুলিশ স্টেশনে ডাকতে হবে।”
সূত্র : এনডিটিভি