মোদির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই প্রিয়াঙ্কার!

পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব কাঁধে উঠেছে আগেই। সম্প্রতি গিয়েছিলেন মা সোনিয়া গান্ধীর লোকসভা কেন্দ্র রায়বেরিলিতে। নাগালে পেয়ে উৎসাহী কর্মীদের প্রশ্ন ছিল, ভোটে লড়বেন? সহাস্য জবাব এসেছিল, বারাণসী থেকে লড়ি! জল্পনাটা তৈরি হয়েছিল তখন থেকেই। জল্পনার গণ্ডি ছাপিয়ে এবার সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বারাণসী থেকে লড়ার বিষয়ে মনস্থির করে ফেলেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি টক্কর দিতে প্রস্তুত সোনিয়া-কন্যা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার পড়েছে হাইকমান্ডের উপর। অর্থাৎ রাহুল ও সোনিয়ার সবুজ সঙ্কেত মিললেই মোদি বনাম প্রিয়াঙ্কার লড়াই পাকা। এবারের ভোটের সবচেয়ে নজরকাড়া লড়াই দেখবে গঙ্গাপাড়ের বারাণসী।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে মোদির বক্তব্য ছিল, গঙ্গা মাইয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে বারাণসীতে এসেছি। এবার বারাণসীতে ভোট ১৯ মে। শেষ দফায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকা সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে শেষ দিনে বারাণসী থেকে প্রিয়াঙ্কার মনোনয়ন পেশের মাধ্যমে বড় চমক দিতে পারে কংগ্রেস। এবার কংগ্রেস কর্মীরা প্রথম থেকেই দাবি তুলছিলেন, উত্তরপ্রদেশ থেকে ভোটে লড়ুন প্রিয়াঙ্কা। এবিষয়ে রাহুল গান্ধীর জবাব ছিল, সিদ্ধান্ত নেবেন প্রিয়াঙ্কাই। আর সেই প্রেক্ষাপটেই খবর আসতে শুরু করেছে, সরাসরি মোদির বিরুদ্ধে লড়তে চাইছেন সোনিয়া-কন্যা।

পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব নেয়ার পর প্রয়াগ থেকে বারাণসী গঙ্গাযাত্রা করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। বারাণসীর অসি ঘাটে দাঁড়িয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অভিযোগ এনে তুলোধোনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। এবার তার জন্য ফের গঙ্গাযাত্রার তোড়তোড় শুরু হয়েছে। আর এবার বালিয়া পর্যন্ত এই যাত্রার সূচনা হবে বারাণসী থেকেই। যা মোদির বিরুদ্ধে তাঁর ভোটে লড়ার জল্পনার ভিত আরও মজবুত করছে। বারাণসীতে মোদির বিরুদ্ধে সরাসরি টক্করের বার্তাবাহীও বটে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদির বিরুদ্ধে সরাসরি লড়ার বিষয়টিকে প্রিয়াঙ্কা নিজে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন। এমনিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কংগ্রেস হাইকমান্ডকে মায়াবতী ও অখিলেশের দলের সঙ্গে কথা বলে এগতে হবে। উত্তরপ্রদেশের মহাজোটে কংগ্রেসের জায়গা না হলেও রাহুলের আমেথি ও সোনিয়ার রায়বেরিলিতে প্রার্থী না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মায়া-অখিলেশরা। বারাণসীতে প্রিয়াঙ্কা যদি মোদির বিরুদ্ধে প্রার্থী হন, তাহলে এক্ষেত্রেও মায়া ও অখিলেশকে পাশে পেতে বিশেষ কাঠখড় পোড়াতে হবে না বলেই কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে।

পাশাপাশি অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে প্রিয়াঙ্কার ঘনিষ্ঠ মহলও। কাটাছেঁড়া চলছে ২০১৪ সালে বারাণসীর ফলাফল নিয়ে। ২০১৪ সালে বারাণসীতে মোদির বিরুদ্ধে পৃথকভাবে লড়াই করেছিল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। তার সঙ্গেই গতবার মোদির বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বিভাজিত বিরোধী শিবিরের সঙ্গে এই লড়াইয়ে বারাণসী থেকে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৭৮৪ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন মোদি। দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছিলেন কেজরিওয়াল।

প্রিয়াঙ্কার ঘনিষ্ঠ মহল মনে করছে, গতবারের মতো এবার আর প্রবল মোদি হাওয়া নেই। বিরোধী ভোট একত্রিত করে মোদির বিরুদ্ধে যদি প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী হন, তাহলে হিসেব উল্টে যাওয়া অবাস্তব কিছু নয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top