জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর পরে শেষপর্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তবে তার উত্তরসূরিদের এই বর্বর গণহত্যার ঘটনার জন্য ক্ষমা চান না তিনি। পার্লামেন্টে তিনি এই দুঃখ প্রকাশ করেন।
থেরেসা বলেন, ‘সে দিনের ঘটনার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত’। যদিও জালিয়ানওয়ালাবাগ বর্বর হত্যাকাণ্ডের জন্য থেরেসাকে ‘পূর্ণাঙ্গ, সুস্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ক্ষমা চাওয়ার’ দাবি জানিয়েছিলেন ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন।
১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে সবক’টি প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়ে কর্নেল রেজিনাল্ড ডায়ারের নির্দেশে বেপরোয়া গুলি চালায় ব্রিটিশ সেনারা। তারপর পরিকল্পিতভাবে চার শতাধিক বাঙালি মুসলিম সেনাকে বর্বরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারি নথিতে হত্যার ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ভারতীয় গবেষকদের মতে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে হাজার ছিল। আহত হয়েছিলেন অন্তত ১২০০ জন।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে ‘নাইটহুড’ ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এ বছর ওই হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। হাউজ অব কমন্সে সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তরের সময় জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলেন থেরেসা।
তিনি বলেন, ‘১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে কলঙ্কের দাগ। ১৯৯৭ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ সফরের আগে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বলেছিলেন, ওই ঘটনা ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে বেদনার উদাহরণ। ওই হত্যাকাণ্ড এবং তার ফলের জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। তবে আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, সহযোগিতা, অংশীদারি, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তার উপরেই আজ ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ক দাঁড়িয়ে রয়েছে। ব্রিটিশ সমাজে প্রবাসী ভারতীয়দের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।’
বিরোধী নেতা লেবার পার্টির জেরেমি করবিন বলেন, ‘জালিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনার নৃশংসতার জন্য এবং যারা সে দিন নিহত হয়েছিলেন, তাদের উদ্দেশে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ এর আগে এক ব্রিটিশ এমপি দাবি করেছিলেন, জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের শতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের ক্ষমা চাওয়া উচিত। এনডিটিভি।