বিজেপির ইস্তেহারে ক্ষোভে উত্তাল কাশ্মির : ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি

সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন তিনেক আগে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে বিজেপি। এ ইস্তেহারে বলা হয়েছে ফের মোদী সরকার ক্ষমতায় এলে জম্মু-কাশ্মিরে ৩৭০ এবং ৩৫ এ ধারার ইতি টানা হবে।

এ নিয়ে চরম বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে জম্মু-কাশ্মির। ভারত অধিকৃত ওই অঞ্চলে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখে সেই ক্ষোভের সুর শোনা গিয়েছে। বিজেপির এ ‘প্রতিশ্রুতি’ পূরণ হলে জম্মু-কাশ্মির সহ সমগ্র দেশে আগুন জ্বলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সেখানকার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।

আগে থেকেই ৩৭০ ও ৩৫ এ ধারা নিয়ে সরব ছিলেন সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতি। তিনি জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মির যে শর্তে ভারতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, সেগুলি যদি উঠিয়ে নেয়া হয় তাহলে ভারতের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই রাখবে না কাশ্মির।

সংবিধানের উল্লেখিত দুই ধারা নিয়ে বিজেপির ইস্তেহারে বলা হয়েছে, এ দুই ধারা বৈষম্যমূলক৷ জম্মু-কাশ্মিরের উন্নয়নের পথেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ধারা। কাশ্মিরি প-িতদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিজেপি।

এ ঘোষণায় মেহবুবা মুফতি বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মির বারুদের স্তূপের ওপরে বসে রয়েছে। ৩৭০ ও ৩৫ ধারা নিয়ে কিছু করা হলে শুধু কাশ্মির নয়, সমগ্র দেশে আগুন জ্বলবে।

এ ব্যাপারে শেষ পর্যায়ে তিনি বলেন, আমি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অনুরোধ করব যাতে আগুন নিয়ে না খেলা হয়। তাহলেই সব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ ও ৩৫-এ বাতিল করার কথা বলেছিলেন আগেই। মনে করা হচ্ছে অমিত শাহের এই বক্তব্যের পাল্টা দিতেই ভারত থেকে কাশ্মিরকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন মুফতি।

জম্মু কাশ্মিরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, ৩৭০ ধারা বাতিল করার চেষ্টা হলে তারা এর মোকাবিলা করবে৷ তিনি বলেন, ওদের মতলব হল বাইরে থেকে লোক আনিয়ে কাশ্মিরে বসিয়ে দেয়া। এরপর নিজেদের জনসংখ্যা বাড়িয়ে আমাদের জনসংখ্যা কমিয়ে দেয়া। কিন্তু এত সহজে কাশ্মিরিরা তা মেনে নেবে না। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ফারুক বলেন, আমরা এর মোকাবিলা করব৷ ৩৭০ ধারা কে কী করে বাতিল করে আমরাও দেখব।
এদিকে নিজেদের ইস্তেহারে জম্মু-কাশ্মিরের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে কংগ্রেসও। তাদের ইস্তেহারে বলে হয়েছে, কাশ্মিরে সেনাদের উপস্থিতি হ্রাস করা হবে। সেই সঙ্গে অঋঝচঅ-র বিষয়েও বিবেচনা করবে।

এর আগে গত সোমবার নির্বাচনী ইস্তেহারে বিজেপি জানায়, এ দুটি ধারা সংবিধানের পরিপন্থী। তাই তারা ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা বাতিলের পক্ষে। কারণ বিজেপি মনে করছে ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা সংবিধানের পরিপন্থী।

লের শীর্ষ নেতা রাজনাথ সিং বললেন, ওই দুই ধারা প্রত্যাহার করে নেয়া ছাড়া সরকারের অন্য কোনো উপায় নেই। মোদী সরকারের মন্ত্রী রাজনাথ যুক্তি দিয়ে বলেন, আমি খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাইছি, যদি জম্মু-কাশ্মিরের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রীর দাবি ওঠে তাহলে সরকারের কিছু করার থাকবে না। বাধ্য হয়েই ৩৭০ এবং ৩৫ এ ধারা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top