আসামে গোমাংস বিক্রি করা মুসলিম ব্যবসায়ীকে খাওয়ানো হলো শুকরের মাংস

ভারতের আসামে আবারো গরুর মাংস বিক্রি করা নিয়ে এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ীকে নাজেহাল করেছে একদল উগ্রপন্থী যুবক। তারা ৬৮ বছরের ওই ব্যক্তিকে কেবল মারধর বা হুমকিই দেয়নি, বরং তারা তাকে শুকরের মাংস খেতেও বাধ্য করে। পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত সোমবার আসামের বিশ্বনাথ জেলার এ ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনার ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ব্যবসায়ী শওকত আলী কাদামাটির মধ্যে হাঁটুতে ভর করে বসে আছেন। তার চারপাশে অনেক যুবকের ভিড়। তারা তাকে বারবার আঘাত করছিল এবং হুমকি দিচ্ছিল। এক পর্যায়ে তারা তাকে শুকরের মাংসের টুকরা খেতে বাধ্য করে। এ সময় এক যুবক তাকে জিজ্ঞাসা করে, তুমি কি বাংলাদেশি? এনআরসিতে কি তোমার নাম আছে?

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি স্থানীয় কিছু গরুর মাংস বিক্রয়ের অভিযোগ নিয়ে তার ওপর হামলা করে। গত রোববার আবারো ১০-১২ জন যুবক তার দোকানে হামলা চালায়। গরুর মাংস বিক্রির লাইসেন্স দেখাতে পারেননি শওকত- এ দাবিতে গত সোমবার তারা ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায়।

শওকতের ভাই সাহাবুদ্দিন বলেন, শওকতকে বাংলাদেশি বলে দাবি করে কিছু যুবক তাকে বেধড়ক মারধর করে। এমনকি তাকে শুকরের মাংস খেতে বাধ্য করে। এমনকি গরুর মাংস বিক্রির অনুমতি দেয়ায় বাজারের ইজারাদার কমল থাপাকেও মারধর করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

উল্লেখ্য, বৃদ্ধ ব্যবসায়ী শওকত আলী আসামের বিশ্বনাথ জেলার চারিআলি এলাকার বাসিন্দা। গত ৩৫ বছর ধরে তিনিকুটির চারিআলি বাজারে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন তিনি। বর্তমানে তাকে একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা এ ঘটনায় দুটি এফআইআর দায়ের করেছে এবং এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই অবশ্য পুলিশ এ ঘটনার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।

এসপি রাকেশ রৌশনের দাবি করেন, বিষয়টি সাম্প্রদায়িক নয়। দুই সম্প্রদায়ের মানুষকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল এ নিয়ে শান্তিবৈঠক ডেকেছেন জেলাশাসক।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top