বায়ু দূষণ রোধে কেবল প্রকল্প নয়, এর উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নজরদারী দাবি করেছেন পরিবেশবাদীরা। তারা বলেন, বায়ু দূষণের প্রধান প্রধান উৎসগুলো চিহ্নিত করে, সেগুলো কমানো বা বন্ধ করার ফলপ্রসু উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবা’র কার্যালয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব দাবি উঠে আসে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। ফেরদৌস আহমেদ উজ্জলের সঞ্চালনায় এতে আলোচনা করেন পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস সোবহান, পবার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, নাসফের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তৈয়ব আলী, ক্যাব নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ, মোঃ সেলিম প্রমূখ।
বক্তারা আরো বলেন, প্রধান প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ নিম্নমানের কয়লা বা তেলের ব্যবহার। পরিবেশ অধিদপ্তরের মান অনুসারে উচ্চ সালফারযুক্ত কয়লা আমদানি নিষিদ্ধ। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি সার্কুলারের মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্ধারিত মান অকার্যকর করেছে। যার ফলে নিম্ন মানের উচ্চ সালফারযুক্ত আমদানিকৃত কয়লা, ইটের ভাটাসহ অন্যান্য জায়গাতেও ব্যবহার হচ্ছে।
এজন্য শুষ্ক মৌসুমে ইটের ভাটা চালু থাকার সময় বায়ু দূষণ অনেক বেড়ে যায়। বায়ুতে সালফারের মাত্রা কমাতে হলে নিম্ন মানের কয়লা আমদানি বন্ধের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের সার্কুলারটি আদালতের মাধ্যমে অকার্যকর করতে হবে অথবা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সার্কুলারটি মানতে বাধ্য করা বা অনুরোধ করতে হবে।
এ জন্য বিশেষ কোনো প্রকল্প বা অর্থের প্রয়োজন নাই। নিম্ন মানের ডিজেল বা পেট্রোল রিফাইন বা আমদানি বন্ধের জন্য জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সহায়তা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রেও পরিবেশ অধিদপ্তরের আলাদা কোনো প্রকল্পের প্রয়োজন নাই। ইটভাটার নিম্ন টেকনোলজির ব্যবহার রোধে সংশিষ্ট অধিদপ্তরের আইনগত ক্ষমতা প্রয়োগ প্রয়োজন।
এখানে পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রকল্পের প্রয়োজন নাই। মোটর যানের ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ বা পুলিশের সহায়তা নেয়া প্রয়োজন।
বায়ুদূষণের চিহ্নিত উৎসসমূহ নিয়ন্ত্রণের জন্য লক্ষ্যমাত্র স্থির, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য অংশীজনের সাথে নিয়ে রোডম্যাপ তৈরি করে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন পবা আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকের আলোচকরা।
বায়ুদূষণের হুমকীতে জনস্বাস্থ্য, দূষণ নিয়ন্ত্রণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বনাম প্রকল্প ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তরা বলনে, বায়ুদূষণের অচিহ্নিত উৎসসমূহ চিহ্ণিত ও তা নিয়ন্ত্রণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ অধিক জরুরি। এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দের মাধ্যমে হোক।