কণ্ঠশিল্পী আসিফ ও সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি। এরমধ্যে ন্যানসি ফেসবুক লাইভে এসে প্রতিবাদ করেছেন ন্যান্সি। আসিফের বিরুদ্ধে কেন মামলা করেছেন সেসব বর্ণনা করেছেন। তবে আসিফ ন্যান্সির সেসব বিশ্লেষণকে উড়িয়ে দিয়েছেন। ন্যান্সি অনেক কথাই ভুলে গিয়েছেন দাবি করে আসিফ বলছেন, ঘুমের ওষুধের প্রভাবে লংটাইম মেমোরি লস হয়েছে ন্যান্সির। শনিবার ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়েছেন আসিফ আকবর।
ওই পোস্টে ন্যান্সিকে সুগায়িকা উল্লেখ করে আসিফ বলেন, সাজানো মামলায় জেলে যাওয়ার পর দৃশ্যপটে হঠাৎ করেই চলে আসে সুগায়িকা ন্যান্সি। ছয়দিন জেলে ছিলাম, এ ছয়দিন প্রেসে ন্যান্সি আমার সম্বন্ধে যা তা বলেছে। অথচ তার সাথে আমার কখনোই কোন বিরোধ হয়নি। আমাকে বলা হয় ন্যান্সির বিরুদ্ধে মামলায় যেতে, আমি যাইনি। তাকে কারা ব্যবহার করেছে সেটা পরে বুঝতে পেরেছি। একজন গুণী জুনিয়র আর্টিস্টের এ ধরনের বেয়াদবিতে কষ্ট পেলেও আমি তখন কোনও মন্তব্য করিনি। পরবর্তীতে শাহরিয়ার নাজিম জয় এবং সাংবাদিক শেখ মন্জু’র প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ন্যান্সির আসল মানসিক অবস্থাটা তুলে ধরেছি। সেটা আরো দু’বছর আগের ঘটনা। হঠাৎ করেই ১০/০৭/২০২০ এ ন্যান্সির থানায় জিডি করে যেটা পরবর্তীতে মামলায় রুপান্তরিত হয়। সে মামলা করলে আরো আগেই করতে পারতো, তাহলে দু’বছর পর কেন করলো সেটারও একটা যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছি।
তার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলকভাবে মামলা হয়েছে দাবি করে আসিফ বলেন, ঝুড়ি ভর্তি বিষাক্ত সাপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে এক জীবন পার করেছি, সাপের মনে নাই আমার হাতেও বীণ আছে। ০১/০৭/২০২০ সালে আরেক সুবিধাপ্রাপ্ত গায়িকা আমার বিরুদ্ধে মামলার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল, পরে জিডি করে ক্ষান্ত হয়। তিনার স্বামী আবার একজন তিন ব্যান্ডের রেডিও, সাংবাদিক কাম গীতিকার। প্রভাব বিস্তার করে আমাকে হয়রানির সুযোগ নিয়েছিল, আমি আগে টের পেয়ে তাদের সে চেষ্টায় পানি ঢেলে দিয়েছি। দশদিনের ব্যবধানে দুই গায়িকার মামলা রহস্যময়। তাদের মধ্যে ফেসবুক ভালোবাসার উত্তাপ দেখে বুঝে গেছি একজন ব্যর্থ হয়ে আরেকজনকে উষ্কানি দিয়ে মামলা করিয়েছে, তাও আবার ময়মনসিংহে।
তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে আসিফ বলেন, পুরনো নন ব্র্যান্ডেড খয়রাতি গীতিকারের মামলার এজাহার এবং গায়িকাদের মামলার বক্তব্য হুবহু। তারমানে তারা একটা চক্র, যারা আমার পিছনে লেগে আছে। সেই তিন ব্যান্ডের রেডিও সাংবাদিক গীতিকার সারাজীবন আমার কাছ থেকে পত্রিকা আর ফিল্মের গানের মাধ্যমে নানান সুবিধা নিয়েছে। ন্যান্সির ফেসবুকের লাইভে সেই রেডিও আবার বেজে উঠেছে। তিনি ন্যান্সির লাইভের প্রশংসা করে মন্তব্যও করেছেন কমেন্ট বক্সে, আমি আরো ক্লিয়ার হয়ে গেছি তাদের যোগসূত্র নিয়ে। তবে আমার কপাল ভাল ডিভোর্স কিংবা যৌন হয়রানী মামলার আসামী হতে হয়নি।
ন্যান্সির কথায় অসঙ্গতি রয়েছে বলে মন্ত্যব্য করেন আসিফ। তিনি বলেন, মামলার পর ন্যান্সি তার ফেসবুক লাইভে আবারো দু’রকম কথা বলেছে। একবার বলে আমার বউকে চেনেই না, আবার বলে ফোনে কথা হয়েছে, তবে দ্বিতীয়টা সঠিক। ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ন্যান্সি স্পেশালাইজড ল্যাব এইডের ৫৫৫ নম্বর কেবিনে অ্যাডমিট ছিলো। খবর পেয়ে আমি রাত এগারোটায় বেগমকে দ্রুত পাঠাই ন্যান্সির খবরাখবর রাখতে, তখন হাসপাতালে ন্যান্সির দ্বিতীয় স্বামী নাজিমও ছিল। বেগমের সাথে ন্যান্সির অনেক দিন কথা হয়েছে, আমি আদর করতাম বিধায় বেগমকে ওর খবর রাখার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সে ক্যাশ তিন লাখ টাকা আমার কাছে কাছে লোন চায়, পরবর্তীতে দ্রুত ফেরতও দিয়ে দেয়। আমার সেজো ভাবী এবং ছোট ভাইয়ের বউ টাকা নেয়ার সময় সামনে ছিল। তারা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
নেপথ্যে অন্যরা কলকাঠি নাড়ছে মন্তব্য করছেন আসিফ। আসিফ বলেন, ন্যান্সির মা মরহুম জোৎস্না হকের সাথেই আমার কথা হতো বেশি, রাজনৈতিক প্রোগ্রামগুলোয় সে মা’র সাথেই যেত। ন্যান্সির প্রথম স্বামী সৌরভের সাভারের বাসায় সম্ভবত তার মেয়ের জন্মদিনের দাওয়াত খেতে গেছি উনার ব্যাপক অনুরোধেই। ডুয়েট অ্যালবাম হওয়ার সময় এবং পরেও তার দ্বিতীয় স্বামীসহ আমার অফিসে প্রায়ই আসতো, ছবিও তোলা আছে। হয়তো অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধের সাইড এফেক্টে ন্যান্সীর লংটাইম মেমোরি লস হয়েছে, ইদানীং সে সবকিছু ভুলে যাচ্ছে। স্বাক্ষীসাবুদ সব প্রস্তুত আছে, প্রয়োজনে ফেসবুক লাইভে তাদের হাজির করবো। ন্যান্সিকে আমার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে পুরনো বস্তাপঁচা দূর্গন্ধময় নন ব্র্যান্ডেড হারামিগুলো, সঙ্গে কিছু সুবিধাপ্রাপ্ত সাংবাদিকও আছে। যদিও সেই সিন্ডিকেট পরে গুঁড়িয়ে দিয়েছি। ঝাড়ীবাজী করলেও ন্যান্সি এখন ত্রিশ হাজার টাকায় গান গায় সেই সাইন করা দলিলও আছে।
ন্যান্সির কাছে আসিফ প্রত্যাশা করে বলেন, আশা করি ন্যান্সি ওই হারামীদের বলয় থেকে বেরিয়ে আসবে। তার কণ্ঠ বাংলাদেশের সম্পদ। প্রয়োজনে ভাল ডাক্তার দেখিয়ে মানসিক ট্রিটমেন্ট করুক এটাই চাওয়া। এসব লিখতে চাইনি, আত্মপক্ষ সমর্থন না করলে হুতাশে ব্যস্ত পাবলিক আবার আমাকেই দোষী ভাববে। আরো বিস্তারিত প্রয়োজনে পরে জানাবো, মামলার জায়গায় মামলা চলুক সমস্যা নাই। ন্যান্সির দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করি, অনেক শুভকামনা তার পরিবারের জন্য, যদি ভাল লাগে প্রয়োজনে আরও মামলা সে দিতে পারে, আপত্তি নেই।