ময়মনসিংহে সাবেক স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: দুই বছর পর র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় পরিত্যক্ত চালা থেকে রোকসানা খাতুনের লাশ উদ্ধারের দীর্ঘ দুই বছর পর র‌্যাব-১৪’র একটি চৌকস টিম ঘটনার সাথে জড়িত সাবেক স্বামী মো. আরিফ হােসেন (২৭) কে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। আরিফ হোসেন কুশমাইল ইউনিয়নের ছলিরবাজার গ্রামের বসু মিয়ার ছেলে।

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়িয়া পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের মো. হারুন অর রশিদের মেয়ে রোকসানা খাতুনকে ২০১৬ সালের দিকে বিয়ে করেন আরিফ হোসেন। বিয়ের অন্তত তিন বছরের মাথায় সংসারে বনিবনা না হওয়ায় তাদের মধ্যে ডিভাের্স হয়। ডিভাের্সের পর হতে রোকসানা খাতুন তার বাবার বাড়ীতে বসবাস করছিলেন। এদিকে আরিফ হোসেনও রোকসানাকে ফিরে পেতে নানা চলছাতুরি করতে থাকে। দীর্ঘদিন রোকসানার সাথে প্রতারনা করার এক পর্যায়ে ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল রাতে ধর্ষণের পর হত্যা করে। পরদিন সকালে বাড়ির পাশেই অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় রোকসানারা লাশ পাওয়া যায়। এঘটনায় প্রথমে একটি অপমৃত্যুর মামলা হলেও ময়নাতদন্ত শেষে ডাক্তার মতামতে দেখা যায় যে, ওই নারীকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং যৌনাঙ্গে পুরুষের বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর রোকসানার বাবা ফুলবাড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুই জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় তখন ময়মনসিংহ জেলাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি দুই বছর ধরে মামলার মূলরহস্য উদঘাটন এবং মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় ফুলবাড়িয়াসহ ময়মনসিংহের বিভিন্নস্থানে একাধিক মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সভা হয়।

র‍্যাব-১৪’র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আসামি আরিফ অটোরিকশাচালক কিংবা গার্মেন্টসকর্মী ছদ্মবেশে সেজে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিল। দীর্ঘদিন যাবৎ র‌্যাব-১৪’র চৌকস আভিযানিক দল গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসামি আরিফ হোসেনের অবস্থান নির্ণয়ের মাধ্যমে গাজীপুরের শ্রীপুর থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামিকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Fulbaria-mymensinghএ ব্যাপারে ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, সাবেক স্ত্রীকে আবারও ফিরে পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ শেষে শ্বাসরোধে হত্যার দায় স্বীকার করে বিচারকের কাছে স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আরিফ। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

পূর্বের প্রকাশিত নিউজ লিংক: ময়মনসিংহে নির্জনস্থান থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার

Share this post

scroll to top