ময়মনসিংহে করোনা ইউনিটে বেডের জন্য হাহাকার: হাসপাতালে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগীদের অতিরিক্ত চাপ বেড়েছে।  হাসপাতালটিতে নির্ধারিত বেডের চাইতে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকায় চাপ সামলাতে হিমশিম পেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগীদের জন্য সাধারণ বেড, আইসিইউ ও এইচডিইউসহ ২৪০ বেডের অনুমোদন থাকলেও ওয়ার্ডটিতে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত ৫৫১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।  এদিকে ডাক্তারসহ অন্যান্য জনবল পর্যাপ্ত না থাকায় অতিরিক্ত রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  ঈদের পর থেকে এ হাসপাতালে সাধারণ বেড ও আইসিইউ সংকট দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।  অনেক রোগীকে হাসপাতালের ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।  গুরুতর রোগীদের আইসিইউয়ের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হচ্ছে।  কোনো রোগী সুস্থ হলে কিংবা মারা গেলেই কেবল পাওয়া যাচ্ছে বেড।  নতুন করে অনেক রোগী ভর্তি হতে আসলেও বেড খালি না থাকায় অনকে রোগী ভর্তি হতে পারছে না।  চাহিদা সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ এর ৫টি বেড বাড়ালেও এই বেডগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিইউ নয়।

ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৭০টি সাধারণ বেড, ৪০টি কেবিন, ২০টি আইসিইউ ও ১০টি এইচডিইউসহ মোট ২৪০টি বেড রয়েছে।  মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালের ২৪০ বেডের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার করোনার রোগী জেনারেল বেডে রোগী ভর্তি আছেন ১২২জন, আইসিইউতে আছেন ৬জন ও এইডিইউতে কোন রোগী ভর্তি নাই।

গত কয়েকদিন ধরে বেডের আশায় হাসপাতালে অপেক্ষমাণ রোগীদের চাপ অনেক বেশি।   ময়মনসিংহ বিভাগের বাইরের করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার হাসপাতালটিতে বেড না পেয়ে অনেক রোগীকে ঢাকামুখী হতে দেখা গেছে। আবার অনেকে বেড না পেয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।  তবে ময়মনসিংহের বেসরকারি হাসপাতলগুলোতে করোনা রোগীদরে জন্য আইসোলেশন, আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধা চালুর নির্দেশনা থাকলেও শুধুমাত্র কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া অনেক বেসরকারী হাসপাতাল এখনও উদ্যোদ নেয়নি। এমনকি ওইসব হাসপাতালে জ্বর, সর্দি নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গেলেও এখন চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল সিভিল সার্জন ময়মনসিংহ শহরের কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, প্রান্ত স্পেশালাইজড হাসপাতাল, স্বদেশ হাসপাতাল, নেক্সাস কার্ডিয়াক হাসপাতাল ও লিবার্টি হাসপাতালের আইসিইউ এর একটি লিস্ট করে। যাতে উক্ত হাসপাতালগুলোর আইসিইউ বেডগুলো পরবর্তীতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ব্যবহার করার কথা।

এব্যাপারে ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, হাসপাতালে ময়মনসিংহ জেলার যেকজন রোগী ভর্তি হচ্ছে বা মারা যাচ্ছে আমরা প্রতিদিন সে তথ্যগুলো শুধু প্রকাশ করছি। পুরো হাসপাতালের তথ্য হাসপাতাল পরিচালক মহোদয় দিতে পারবেন।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. ফজলুল কবিরের সরকারি মোবাইলের মাধ্যমে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Share this post

scroll to top