ভাড়ার বোঝা কমাতে লঞ্চে যাত্রীর ভিড়

গন্তব্যে যেতে বাসের ভাড়া বেশি হওয়ায় মানুষ লঞ্চের দিকে বেশি ঝুঁকছে বলে মনে করছেন লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকরা। তারা বলছেন, যাত্রীরা বাসের ভাড়ার চাপ এড়াতে লঞ্চে চেপে বসেছেন। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেও সে চিত্র পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (০৫ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, চাঁদপুরগামী লঞ্চে মানুষের ব্যাপক ভিড়। কিছুক্ষণ পরপর এ রুটের লঞ্চ সদরঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠির রুটের লঞ্চে মানুষের ভিড় বাড়তে দেখা গেছে।

ঢাকা থেকে বরিশাল রুটে চলাচলকারী পারাবাত লঞ্চের কেবিনের দায়িত্ব থাকা মোহাম্মদ রাসেল ভাড়ার বিষয়ে বলেন, সিংগেল কেবিনের ভাড়া নন-এসি ৯০০ টাকা, আর এসি ১০০০ টাকা। ডাবল কেবিন ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা৷ এছাড়া যারা ডেকের যাত্রী তাদের জন্য জনপ্রতি আগের ভাড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা রাখা হচ্ছে।

ঢাকা থেকে হুলারহাট (পিরোজপুর) রুটের ফারহান-৯ লঞ্চের ম্যানেজার কিসলু হোসেন বলেন, এ রুটে যাত্রীরা আগের ভাড়াতেই যাতায়াত করছেন। ডেকের যাত্রীদের কাছ থেকে স্থানভেদে রাখা হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। সিংগেল কেবিন ১১০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২২০০ টাকা, সেমি ডাবল ৩৫০০ টাকা, সেমি ভিআইপি কেবিন ৪৫০০ টাকা।

তিনি বলেন, সরকার বাসের ভাড়া বাড়ানোর কারণে লঞ্চেই বেশি মানুষ বাড়ি যাচ্ছে। বাসে আগে যেখানে ৩৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় পিরোজপুর যাওয়া যেতে, সেখানে এখন ভাড়া দিতে হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। তাই যাদের সামর্থ্য নেই তারা লঞ্চেই বেশি যাতায়াত করছেন।

এদিকে ঢাকা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বাগেরহাট রুটে চলাচল করা সাকুরা পরিবহনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ঢাকা থেকে বরিশালের যাওয়ার জন্য এখন নন-এসি বাসে ভাড়া রাখা হচ্ছে ৮১৫ টাক। আর এসি পরিবহনে ভাড়া রাখা হচ্ছে ১০৫০ টাকা। যা আগের ভাড়ার থেকে ৬০ শতাংশ বেশি৷ এছাড়া এখন ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর ভাড়া রাখা হচ্ছে নন-এসি বাসে ১১০০ টাকা, ঢাকা থেকে পিরোজপুরের ভাড়া ৯৯০ টাকা, ঢাকা থেকে ঝালকাঠি রুটের ভাড়া ৮৬৫ টাকা৷

তিনি বলেন, সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব রুটেই আগের ভাড়ার থেকে ৬০ শতাংশ বেশি রাখা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই ভাড়া বলবৎ থাকবে।

অন্যদিকে পারাবাত-১২ লঞ্চের কর্মী হেলাল হোসেন বলেন, লঞ্চ চলাচলের প্রথমদিন থেকেই যাত্রীদের ব্যাপক ভিড়। প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। এর কারণ বাসে ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি। আর যাত্রী চাপ থাকায় লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল মুহিত বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বেড়েই চলছে। তাই এই সংক্রমণ রোধ করতে হলে অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সব স্থানেই খুব সতর্কতার সঙ্গে আমাদের চলাচল করতে হবে।

বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) কাজী ওয়াকিল নওয়াজ বলেন, প্রথমদিন থেকেই আমার কাছে কিছু কিছু অভিযোগ এসেছে স্বাস্থ্যবিধি না মানার। যাত্রীদের পাশাপাশি লঞ্চের কর্মীরাও নাকি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছে, এমনটাও শুনেছি। তাই আমি আমাদের মনিটরিং টিমকে বলেছি কঠোরভাবে নজর রাখতে।

Share this post

scroll to top