ঝিনাইগাতীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১০ সদস্যের অনাস্থা

ভিজিডি’র চাল আত্মসাত, স্বেচ্ছাচারিতা, ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী ফর্সার বিরুদ্ধে ১০ জন ইউপি সদস্য অনাস্থা জানিয়েছেন। শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ আমাদের সময়কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

লিখিত অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জিয়াউর রহমান, হামিদুল্লা, আলমগীর হোসেন রুপন, আকবর আলী, শাহ জাহান, আ. বারিক, মজনু মিয়া, সংরক্ষিত আসনের (মহিলা) সদস্য শেফালী বেগম, রৌশন সিদ্দিকী।

প্রস্তাবে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেছেন, মো. আইয়ুব আলী ফর্সা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরকারি বিধি না মেনে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ঘুষ কেলেঙ্কারী, ত্রাণ আত্মসাত, এলাকার দুস্থ-অসহায় বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও পুষ্টি ভাতা, কৃষি প্রণোদনার অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম করেন।

এ ছাড়া ২০১৯-২০অর্থ বছরের নলকুড়া ইউনিয়নে বরাদ্দ প্রাপ্ত ৩৫৩টি দুঃস্থ মহিলাদের ভিজিডি’র কার্ড পেয়ে অনিয়মের মাধ্যমে নাম-বেনামে ১২৪টি কার্ডের অনুকূলে বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন তিনি। পাশাপাশি করোনা দুর্যোগকালে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের ত্রাণসামগ্রী, নগদ অর্থ ও বিভিন্ন ভাতা বিতরণে ব্যাপক নয়-ছয়, স্বজনপ্রীতি আর স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন।

শুধু তাই নয়, ট্যাক্স আদায়ের অর্থ দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ না করে সব অর্থ আত্মসাৎ করেন। তাই অনাস্থা প্রস্তাবটি গ্রহণ করে তার অপসারণসহ দ্রæত অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইউপি সদস্যরা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আইয়ুব অলী ফর্সা দাবি করেন, ‘আমি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে গুজব রটাতে উঠেপড়ে লেগে আছে। ওই মহলের প্ররোচনায় ইউপি সদস্যরা এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। আমার ইউনিয়নে কোনো অর্থই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। অনাস্থাপত্রটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আগামীকাল পাঠানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুঃস্থ মহিলাদের ভিজিডি’র কার্ড পেয়ে অনিয়মের মাধ্যমে নাম-বেনামে ১২৪ জনের কার্ডের অনুকূলে বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাতের অভিযোগটি তদন্তে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

স্থানীয় সরকার বিভাগ শেরপুরের উপপরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘পরিষদের সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবপত্রটি তিনি এখনো পাননি। পেলে সরকারি বিধি মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Share this post

scroll to top