ময়মনসিংহে কভারবিহীন বিদ্যুতের তারে ঝলসে মরছে বন্য প্রাণিরা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া সন্তোষপুর বনাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের কভারবিহীন তারে ঝলসে আহত ও নিহত হচ্ছে বন্য প্রাণীরা।

গেল এক সপ্তাহে ৮-১০টি বানরের হাত, পা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গুরুতর আহত হয়েছে। এরপরও পদক্ষেপ না নেয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে বনাঞ্চলের প্রাণিরা।বনের দায়িত্বে থাকা বিট কর্মকর্তা বলছেন, বিদ্যুৎ বিভাগের খামখেয়ালিপনা আর খোলা তারে বিদ্যুৎ সংযোগের কারণেই ঘটছে এ দুর্ঘটনা।

যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি নিয়ম মেনেই সংযোগ দেয়া হয়েছে বনের ভেতর।মধুপুর বনাঞ্চলঘেষা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ও নাওগাঁও ইউনিয়নের প্রায় ৮৬৩ দশমিক ১৪ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল। একসময় এ বনে হরিণ, ভাল্লুক, হনুমান, সজারু ও বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য ছিল। প্রাকৃতিক নানা কারণসহ গাছ কেটে বন উজাড় করায় দিনদিন এসব বন্যপ্রাণি হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমানে এ বনে প্রায় সাড়ে তিনশ’ বানর রয়েছে। বানরগুলো প্রায়ই লোকালয়ে  অবাধ বিচরণ করছে।   গেল ১৫ ডিসেম্বর সন্তোষপুর বনাঞ্চলের আশপাশে ও বিট অফিসে পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ উদ্বোধন করা হয়। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন বন্যপ্রাণির অবাধ বিচরণের কথা মাথায় রেখে খোলা তারে সংযোগের পরিবর্তে কভারিং তার ব্যবহারের নির্দেশ দেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে।

কিন্তু তা আমলে নেয়নি পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা। ফলে বনের ভেতর দিয়ে টানা বিদ্যুত সংযোগের খোলা তারে জড়িয়ে গেল দুই সপ্তাহে ঝলসে যায় ৮-১০টি  বানরের হাত-পা, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ।স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভাগের খামখেয়ালিপনা আর খোলা তারে বিদ্যুত সংযোগের কারণেই ঘটছে এ দুর্ঘটনা। এছাড়া বানরের খাবার সংকট তো রয়েছেই।ময়মনসিংহ বন বিভাগের সন্তোষপুর অঞ্চলের বিট কর্মকর্তা আশরাফুল আলম খান  জানান, আসলে বানরতো বণ্যপ্রাণি। অবাধ বিচরণ করবেই। এদরকে পাহারা দিয়ে আমরা কিছু করতে পারব না। বানরের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে বিদ্যুৎ বিভাগকে আগে থেকে চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ তাদের সংযোগে কাভার তার বসালেই বানরগুলো এ সংকট থেকে মুক্তি পাবে।ফুলবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস ডিজিএম অনিতা বর্ধনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি  বলেন, নিয়ম মেনেই সংযোগ দেয়া হয়েছে বনের ভেতর। অভিযোগ শুনে আমাদের পক্ষ থেকে যে যে ব্যবস্থা নেয়ার কথা সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এইচটি লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আর এলটি লাইন নিচে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন কারিগরি দিক থেকে আর সমস্যা নাই। সূত্র: আরটিভি

Share this post

scroll to top