বিআরটিসির উপরে যারা আছেন তারাই দুর্নীতিতে যুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শনিবার দুপুরে বিআরটিসি শ্রমিক কর্মচারি লীগ (সিবিএ) আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিআরটিসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে । কারা কারা ভাগাভাগি ও দুর্নীতিতে যুক্ত আমার জানা আছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে আমি কঠিন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, লাভের গুড় যদি পিপড়া খেয়ে ফেলে সেখানে লাভের আশা করা কঠিন। বিআরটিসিতে অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, কোন দেশ রিফিউজিদের এভাবে সীমান্ত খুলে দিয়ে গ্রহণ করেনি। তাদের প্রতি যে সহমর্মিতা দেখানো হয়েছে তার নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী যেখানে গেছেন সেখানে প্রশংসিত হয়েছেন।
রোহিঙ্গাদের হাতে আওয়ামী লীগ কর্মী খুনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আশ্রয় শিবিরে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আছে। সেখানে যে সবার মানসিকতা একই হবে তা ভাবা যায়না। তার মধ্যে কিছু দুবৃর্ত্তও থাকতে পারে।
তিনি বলেন, হত্যার বিষয়টি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তাদের কারণে আমাদের ইকোনমি সমস্যা হচ্ছে। পর্যটকদের সমস্যা হচ্ছে। পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আজকে যারা বলেন কূটনৈতিকভাবে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আমি বলবো, শেখ হাসিনার সরকার সফলভাবে তাদের ফেরাতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সবার একটা অংক আছে। এই অঞ্চলে তাদেরও বন্ধু আছে। এখানকার সমস্যা যতো কঠিন সমাধান ততো সহজ নয়। এখানে ব্যর্থতার কোন বিষয় নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের সব দায় মিয়ানমারকে নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের সম্মানের সাথে, নিরাপত্তার সাথে তাদের সেখানে ফেরাতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বিষয়। এতে কূটনৈতিক ব্যর্থতার কিছু নেই। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন ঘটনা নেই যে সীমান্ত খুলে দিয়ে ১১লাখ রিফিউজিকে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর্ন্তজাতিকভাবে মিয়ানমারের উপর চাপ বাড়ছে। তাদের দেশে ফেরানোর বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কোন বিভাগে শৈথিল্য নেই। প্রধানমন্ত্রী সরাসরি তা তত্বাবধান করছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্ব ইতিহাসের অনেক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা জানি। সব হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার করলে বঙ্গবন্ধুর মতো নৃশংস হত্যাকাণ্ড আর হয় না। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই ঘটনার বিচার হলে পরবর্তীতে একটি গোষ্ঠি মেজর জিয়াকে হত্যা করতে পারতো না। ইতিহাস নির্মম। সেদিন বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সেনা উপপ্রধান মেজর জিয়া। এদেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে যে অবিচ্ছিন্ন দেয়াল তারা তৈরি করেছে। তা ভুলবার নয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাদের বিদেশের দুতাবাসে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করেছেন।
বিআরটিসি শ্রমিক কর্মচারি লীগের সভাপতি আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচীব ফরিদ আহমদ ভূইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ প্রমুখ।