বাঙালি গণহত্যার দায়ে এমপি বাসন্তীর ‘ভাই’দের বিচার দাবি

খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে ৮৬’র বাঙালি গণহত্যার দায়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ এলাকায় এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

বিক্ষোভ মিছিল-মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল মহান সংসদে সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমার অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে।

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় সচেতন পার্বত্যবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধনে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ জড়ো হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আবুল হাসেম চৌধুরী, আব্দুর রশিদ মোল্লা, আব্দুল মাজেদ গাজি, খন্দকার আব্দুল ওহাব ও মো: রেজাউল করিম।

বক্তেব্যে বাসন্তী চাকমার মহান সংসদে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।

বক্তব্যে ওঠে আসে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন শান্তিবাহিনী কর্তৃক লক্ষ্মীছড়ির দুল্যাতলী মলঙ্গী পাড়ার বাঙালি গণহত্যা ও কুমারি এলাকায় নৃসংশভাবে রাতের অন্ধকারে মানুষকে পুড়িয়ে মারা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার ভয়াবহ চিত্রের কথা।

আব্দুল মাজেদ গাজি তার বক্তেব্যর এক পর্যায় বলেন, ‘দুল্যাতলীর সেই ভয়াবহ মানুষ হত্যার কথা আমরা এখনো ভুলে যাইনি। আমার নৃশংস সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

খন্দকার আব্দুল ওহাব বলেন, ‘দুল্যাতলী মলঙ্গী পাড়ায় ১০ জন, কুমারি এলাকায় ১১ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে শান্তিবাহিনী লোকজন গুলি করে, গ্রেনেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে এবং ঘরের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে মেরে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। শুধু তাই নয়, ২২টি গরু লুট করে নিয়ে যায় এবং ৫৩টি বসতঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়। গুলি খেয়ে এখনো অনেকে বেঁচে আছে। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। এই নৃসংশ হত্যাকান্ডের ঘটনা ইতিহাসের পাতায় নেই। কিন্তু মানুষের হৃদয় এখানো শোকাবহ সেই দিনগুলো ভুলেনি। বাসন্তী চাকমার সেই ভাইদেরও বিচার করতে হবে।’

পরে মানববন্ধন রূপ নেয় বিক্ষোভ মিছিলে। মিছিলটি উপজেলা সদর, বেলতলী পাড়া ও থানা এলাকায় প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাঙালি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, বাসন্তী চাকমা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙালিদের নিয়ে যে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন তা পার্বত্যবাসী মেনে নিবে না। আমরা এর ধিক্কার, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ধরনের বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান বক্তারা।

অবিলম্বে তাকে অপসারণসহ তার শাস্তি দাবি জানানো হয় সমাবেশে। অন্যথায় মহান জাতীয় সংসদে উগ্র-সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দেলন গড়ে তোলা হবে বলে বক্তারা হুঁশিয়ার করে দেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top