ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির নীচে চাপা পড়ে বৃদ্ধ প্রতিবন্ধী আছর উদ্দিনের (৬৮) নিহতের ঘটনায় দুইলাখ টাকায় রফাদফা হয়েছে। পরে সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাত ৯টায় নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (ভালুকা)-২, গফরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা, কর্মচারী, ঠিকাদার এবং স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল ঘটনার পর থেকেই তৎপর হয়ে উঠে। তারা একজোট হয়ে হতদরিদ্র নিহতের পরিবারকে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করে।
জানা গেছে, নির্মাণাধীন ভালুকা-গফরগাঁও-খুরশীদমহল ব্রিজ সড়কে হাটুরিয়া মোড় থেকে ৪ কিলোমিটার পল্লী বিদ্যুতের নতুন সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহির এন্টারপ্রাইজ কাজটি করছে। রবিবার বিকালে ওই এলাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেশ কয়েকটি খুঁটি স্থাপন করে। খুঁটিগুলো মাত্র দেড় ফুট থেকে দুই ফুট গর্ত করে স্থাপন করার অভিযোগ ওঠে। টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী খুঁটিগুলো কমপক্ষে ৬ ফুট গর্ত করে স্থাপন করার কথা।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে প্রতিবন্ধী আছর উদ্দিন গরু নিয়ে ওই খুঁটির সামনে দিয়ে মাঠে যাওয়ার সময় বিদ্যুতের খুঁটি তার শরীরের উপর পড়ে। এতে খুঁটির নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পরে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন, ঠিকাদার ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দেন-দরবার করে আছর উদ্দিনের লাশের মূল্য নির্ধারণ করে দুই লাখ টাকা। তারপর নিহতের পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে তিন’শ টাকার ষ্ট্যাম্পে আপোষ নামার সই আদায় করে নেয়। পরে এই ষ্ট্যাম্প থানায় জমা দিয়ে লাশ দাফন করে।
নিহতের ছেলে শাহাবুদ্দিন (৪৪) ও জামাল (৩০) এ বিষয়ে কোন ধরনের কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (ভালুকা)-২, এর এজিএম ( ইএন্ডসি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে। মামলার বিষয়টি থানা পুলিশ জানে।
গফরগাঁও থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ বলেন, নিহতের পরিবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও পল্লীবিদ্যুতের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে আপোষনামা দেওয়ায় থানায় মামলা হয়নি।