ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে চুরি চাওয়া অটোরিক্সা চোর চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ জেলার চৌকস টিম।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ শহর ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে অটোরিক্সা চুরি-ছিনতাই করছে বেশ কয়েকটি চক্র। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে “ ঈশ্বরগঞ্জে অটোরিক্সাসহ চালক নিখোঁজ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেয় পিবিআই।
ঘটনার বিবরণীতে জানা যায়, গত ২৪ জুন সকালে ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি ইউনিয়নের বিষ্ণপুরের শহিদ মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়া ভাড়া করা অটোরিক্সা নিয়ে বাড়ী হতে বের হয়। সন্ধায় সে বাড়ীতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তার মোবাইলে কল দিলে ফোন বন্ধ পায়। পরে তার পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে ২৫ জুন ঈশ্বরগঞ্জ থানায় জিডি করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার চৌকস টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি টিমের সহযোগীতায় গত ২৮জুন দিবাগত রাতে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থানা এলাকা হতে আত্মগোপনে থাকা অটোচালক রায়হান মিয়াকে উদ্ধার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান স্বীকার করে যে, সে নিজেই অটোরিক্সাটি কৌশলে চুরি করে বিষ্ণপুরের ইউসুফ আলীর ছেলে পেশাদার অটোরিক্সা ক্রয়-বিক্রয়কারী মতিউর রহমান মতি’র মাধ্যমে সতের হাজার টাকায় কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের কাজলা গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে রিপন মিয়ার (২৮) কাছে বিক্রি করে। ওই টাকা থেকে মতি মিয়াকে তিন হাজার টাকা দিয়ে বাকী ১৪ হাজার টাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে যায় রায়হান। সেখানে গিয়ে রায়হান বার হাজার টাকা দিয়ে একটি মোবাইল কিনে এবং এক গোডাউনে লেবারের কাজ নেয়।
এদিকে আসামী রায়হানকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যমতে একে একে অটোরিক্সা চোরচক্রের সাথে জড়িত মতিউর রহমান মতি এবং রিপন মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং কিশোরগঞ্জ শহরের যশোদল এলাকা হতে চুরি যাওয়া অটোরিক্সাটিও উদ্ধার করা হয়।
চোরচক্রের দেয়া তথ্যমতে, চোরাই অটোরিক্সাটি কয়েকটি হাত ঘুরে শীঘ্রই পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলার চোরাইমালে আরেকটি চক্রের নিকট হস্তান্তরের পরিকল্পনা ছিল। আসামীরা আরও জানায়, তারা সংঘবদ্ধ অটোরিক্সা চোর চক্রের সদস্য। তারা অভ্যাসগতভাবে কৌশলে অটোরিক্সা চুরি করে বিক্রয় করে থাকে। এদিকে এ চক্রটি অন্যান্য চোরচক্র সম্পর্কে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন পিবিআই’র পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।
এদিকে চুরি যাওয়া অটোরিক্সার মালিক ঈশ্বরগঞ্জের দিঘালিয়া গ্রামের রুনা আক্তারের অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে ঈশ্বগঞ্জ থানায় মামলা রুজু হয়েছে।