বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমে কবির জানাযা

আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম কবি আল মাহমুদের জানাযা অনুষ্ঠিত হবে শনিবার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। কবির পরিবারের পক্ষ থেকে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে। সোনালী কাবিন খ্যাত কবি শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

লেখা লেখির সূত্রে সাহিত্যের অনেকগুলো শাখায় বিচরণ করেছেন এ মানুষটি। তবে নিজেকে একজন কবি পরিচয় দেয়াই ছিল তার কাছে সবচেয়ে গর্বের। একটি সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কবি হব—এটা আমার রক্তের মধ্যে ছিল। ফলে সব সময় কবিতার কথাই চিন্তা করেছি। সারাক্ষণ কবিতার ছন্দ, অন্ত্যমিল, ভঙ্গি ইত্যাদি নিয়ে ভেবেছি। এভাবেই স্বতন্ত্র পঙ্‌ক্তি চলে এসছে’।

বাংলা কবিতার এই প্রাণপুরুষ লেখা লেখির জন্য কারাগারে পর্ন্ত গিয়েছেন, তবুও থেমে থাকেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, কবিতা লেখা সহজ কাজ নয়। একজন কবি লেখেন, এ কারণে তাকে পরিশ্রম করতে হয়। আমার ক্ষেত্রে কী ঘটেছে বা ঘটে? আমি আগে দেখি, তারপর লিখি। সাহিত্যে যাকে বলে কল্পনা, একজন কবি তাকে বহু বিস্তারিত করতে চান। আমি দেখি এবং লিখি। এই দেখা আর লেখার যে সংমিশ্রণ, সেটা অতুলনীয় এক ব্যাপার। এখানে বলে রাখি, বেশ আগে থেকেই চোখে ভালো দেখতে পাই না আমি। এখন এর সাথে যুক্ত হয়েছে স্মৃতিহীনতা—অনেক কিছুই আজকাল মনে করতে পারি না। ফলে খুব গুছিয়ে কথা বলা এ সময়ে আমার জন্য বেশ কষ্টকর। কিন্তু নিজের কবিতাযাপনের কথা বলতে গিয়ে বলব যে, আমি খুব ধীরেসুস্থে, চিন্তাভাবনা করে লেখা শুরু করি। লেখাটা যখন শেষ হয়, আমার মনে তখন পুলক—একটা আনন্দ জাগে। এই হলো লেখার ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা।

কবির মুখ থেকে লেখালেখির এমন অভিজ্ঞতা শোনার আর সুযোগ হবে না আমাদের। কারণ তিনি তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি ‘সোনালী কাবিন’র বর্ণনা দিয়ে চলে গেছেন পৃথিবীর সমস্ত মায়াজাল ছিড়ে।

কবির মৃত্যুতে সাহিত্যাঙ্গনে শোকের ছাড়া নেমে এসেছে। রাজনৈতিক দলের নেতারাও তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top