ময়মনসিংহের ভালুকায় জঙ্গলের ভেতর মাটিতে পুঁতে রাখা কিশোরীর (১৫) লাশের পরিচয় মিলেছে। এ ঘটনায় কিশোরীর সৎ বাবা শফিকুল ইসলামকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ।
শনিবার সকালের দিকে কুড়িগ্রামের নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। নিহত ওই কিশোরের নাম মিনু আক্তার। সে কুড়িগ্রাম জেলার ওলিপুর থানার দীঘলআইলা গ্রামের মিলন মিয়ার মেয়ে।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও পোশাককর্মী মাহমুদা বেগম তাদের আগের স্ত্রী ও স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রায় দেড় বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তারা কিশোরী মিনু আক্তারকে সাথে নিয়ে ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া মাস্টারবাড়ি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। একপর্যায়ে শফিকুল ইসলাম ব্যবসা করার কথা বলে স্ত্রী মাহমুদা বেগমের কাছে তার আগের কর্মস্থল চট্টগ্রামের একটি কারখানায় পাওনা এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা এনে দেয়ার জন্যে চাপ দেন। কিন্তু, মেয়েকে বিয়ে দেয়ার কথা বলে মাহমুদা বেগম তার ওই টাকা স্বামী শফিকুলকে দিবে না বলে জানিয়ে দেন। পরে, পাওনা টাকা আনার জন্যে মাহমুদা বেগম গত ৭ জুন চট্টগ্রাম যান।
সূত্রে জানায়, শফিকুল ইসলাম তার স্ত্রীর টাকা পাওয়ার জন্যে বন্ধু রিপনের সাথে পরামর্শ করে মিনুকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে, মায়ের অনুপস্থিতিতে শফিকুল গত ৮ জুন রাতে ঘরে ঘুমন্ত মিনুকে হত্যা করে ভাড়া বাসার পাশের এক জঙ্গলে ফেলে আসেন। পরদিন রাতে ওই লাশ একই এলাকায় প্রস্তাবিত একটি কারখানায় বাউন্ডারির ভেতর মাটির নিচে পুতে রাখেন। এদিকে, মিনুকে চাপা দেয়া মাটি বৃষ্টির পানিতে সরে গিয়ে তার পা বের হয়ে আসে। পরে, স্থানীয়রা গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ওই দিন দুপুরে লাশটি উদ্ধার এবং হত্যা মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
পরে গোপন সূত্র ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে কুড়িগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মিনুর সৎ বাবা শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হেসেন জানান, মিনু আক্তারের সৎ বাবা শফিকুলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।