ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের আমতলী এলাকা থেকে অপহৃত বন্দনা রানীকে সিলেটের সবুত বাজার এলাকায় তার ফুফুর বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১৮ মে) ভালুকা মডেল থানার এসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫ জন পুলিশ সদস্যের টিম তাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বন্দনা রানী হবিরবাড়ি ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে তার বাবা বিজন কর্মকার সহ এনামুলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পাশেই রতনের বাড়ির ভাড়াটিয়া রাকিব এর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর হওয়ায় বন্ধনা রাণীর বাবা প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করে।
যার ফলশ্রুতিতে কাউকে না জানিয়ে বন্ধনা রাণী তার প্রেমিক রাকিবের বাসায় চলে যায়। স্থানীয়রা সালিশের মাধ্যমে বন্দনা রানীকে তার বাবার কাছে তুলে দিয়ে তাদেরকে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে চলে যেতে বলেন। বিষয়টি বন্দনা রানী টের পেয়ে নিজে থেকেই আত্মগোপনে চলে যায়।
বন্ধনার বাবা বিজন কর্মকার ভালুকা মডেল থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। রাকিব তখনও এলাকায় থেকে নিয়মিত ডিউটি করছিলেন।
বন্ধনা নিখোঁজের ৪দিন পর রাকিব যখন তার বেতন তুলে এলাকা থেকে চলে যায়। তখন সন্দেহের তীর রাকিবের দিকে চলে যায়। পুনরায় বন্দনার বাবা বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাকিব সহ তার বড় ভাই, বাবাকে আসামি করা হয়।
পুলিশ রাকিবকে খোঁজে না পেলেও তার বড় ভাই এবং বাবাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেন। কিছুদিন পর তারা শর্তসাপেক্ষে জামিনে বের হয়।
এক মাস পেরিয়ে গেলেও বন্ধনা রাণী এবং রাকিবকে উদ্ধার করতে না পেরে পুলিশ বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে। অবশেষে ভালুকা মডেল থানার এসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ২ জনকেই রাকিবের ফুফুর বাড়ি সিলেট থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ২ জনেই স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে তারা স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা ২ জনেই প্রেমের টানে স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়েছিলেন। মোবাইল ব্যবহার করতেন না বলে তাদেরকে খুঁজে পেতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে।
বন্দনা রানীকে মেডিক্যাল করতে মমেকে পাঠানো হয়েছে এবং রাকিবকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বন্দনা রানীর কাছ থেকে দুটি ভোটার আইডি উদ্ধার করা হয়েছে যার একটিতে বয়স ১৩ বছর আরেকটিতে ১৯ বছর। কোনটি সঠিক? তা তদন্ত করেই বের করা হবে।
এছাড়া গত ১১ মে নেত্রকোনা জজ কোর্টে ধর্মান্তরিত হয়ে তারা ২ জন বিয়ে করেছেন এরকম দুটি স্টাম্প উদ্ধার করা হয়েছে।