ময়মনসিংহে এক নারী ফুটবলারকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ময়মনসিংহের নান্দাইল মডেল থানা-পুলিশের একটি দল গাজীপুর জেলার গাছা থানার ছয়দানা এলাকার একটি বাসা থেকে বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে ওয়াহিদুল আলম ফকির ওরফে ফয়সাল নান্দাইল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করে। উপজেলা ছাত্রলীগে বর্তমানে কমিটি নেই। তবে ওয়াহিদুল এখনো অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন।
দুপুরে নান্দাইল উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা চলার সময় স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আবেদীন খানের ফোনে ওয়াহিদুলকে গ্রেপ্তারের সংবাদ আসে। পরে তিনি খবরটি সভায় অবহিত করেন। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবুল মনসুর, নান্দাইল মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ওবায়দুর রহমান প্রমুখ। বৈঠকে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ছাত্রলীগের ওই নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই নারী ফুটবলার বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে নান্দাইল উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নিয়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। নির্যাতিত হওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী বেশ কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা চালান। তিনি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে তাঁর অভিভাবককে সঙ্গে নিয়ে গত সোমবার থানায় এসে অভিযোগ জমা দেন। পুলিশ তাঁর অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে। তবে আসামিকে গ্রেপ্তারের সুবিধার্থে বিষয়টি গোপন রাখে পুলিশ।
মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেছে, ছাত্রলীগের নেতা ওয়াহিদুল ২২ এপ্রিল ওই নারী ফুটবলারকে মুঠোফোনে কল করে একটি উপবৃত্তির ফরমে স্বাক্ষর দিয়ে যেতে বলেন। ওই নারী ওয়াহিদুলের কথা বিশ্বাস করে তাঁর নিজ কলেজে যান। সেখানে যাওয়ার পর তাঁকে ওয়াহিদুল একটি পুরোনো ভবনের পেছন দিকের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এ সময় তিনি চিৎকার করলে তাঁকে ছেড়ে দিয়ে চলে যান ওয়াহিদুল।
সাংসদ আনোয়ারুল আবেদীন খান সভায় জানান, ওই নারী ফুটবলার তাঁর কাছে ঘটনাটি জানিয়েছিলেন। তিনি পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন। এর পর থেকে ছাত্রলীগের ওই নেতা তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে তাঁকেসহ (সাংসদ) ও তাঁর পরিবারে সদস্যদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য লিখে একাধিক পোস্ট করেন। এই পোস্ট অনেকেই লাইক ও শেয়ার করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়। সাংসদ বলেন, এতে তাঁর সম্মানহানি হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন।
ওয়াহিদুলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, গাজীপুরের গাছা থানার এলাকা থেকে নান্দাইল থানা-পুলিশের একটি দল ওয়াহিদুলকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁকে নান্দাইল থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে।