কখনো তিনি সচিব আবার কখনো প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা বন্ধু। এসব পরিচয়ে তিনি ব্ল্যাকমেইল করে যাচ্ছেন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষদের। তিনি এখন অনেকটা আতঙ্কের নাম। আবার তিনি সমাজসেবা অধিদফতরের তালিকায় একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হিসেবে ভাতাও তুলছেন নিয়মিত।
তিনি বরগুনার বেতাগী পৌরসভার বাসিন্দা সামসুল আলম। ভুয়া পরিচয় দিয়ে এ ব্যক্তি হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা- এমনটাই অভিযোগ একাধিক ব্যক্তির।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত জয়নাল আবেদীদের ছেলে এ কে এম সামসুল আলম জনপ্রশাসন ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন অর্থ। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী তার দাবিকৃত টাকা দিতে অসম্মতি জানালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তিনি কখনো জনপ্রশাসন ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব পরিচয় দেন। আবার কখনো কখনো প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার এইচ টি ইমামের বন্ধু পরিচয় দিয়ে সুবিধা ভোগ করছেন।
এ সামসুল আলম বেতাগী রূপালী ব্যাংকের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার জয়ন্ত হালদারের কাছে চেক নিয়ে গিয়ে ব্যাংকের নিয়মবর্হিভূতভাবে টাকা উত্তোলন করতে চান। এ সময় জয়ন্ত হালদার বলেন, ব্যাংকের প্রচলিত নিয়ম মেনেই আমার কাজ করতে হবে। আমি অনিয়ম কিছু করতে পারব না।’ পরবর্তীতে ওই সামসুল আলম নিজেকে জনপ্রশাসন ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব পরিচয় দিয়ে ফোন দেন জয়ন্ত হালদারকে। এ কথা জানিয়েছেন জয়ন্ত হালদার নিজেই।
একই ভাবে বেতাগী সমাজসেবা অফিসে কর্মরত অফিস সহকারী আব্দুস সোবাহান মিয়া, রূপালী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার হারুন অর রশিদ, বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী শংকর দেবনাথসহ একাধিক ব্যক্তির কাছে মোবাইল ফোনে জনপ্রশাসন ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব কিংবা এইচ.টি ইমামের বন্ধু কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন পরিচয় দিয়ে ফোন করেন তিনি। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এসব চাকরিজীবীদের।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, সামসুল আলম বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তিনি সোনালী ব্যাংক বেতাগী শাখা থেকে (ভাতার হিসাব নং- ১৬০৬৯) প্রতিমাসে ৭ শ’ টাকা করে ভাতা তুলছেন। ২০১৮ সাল থেকে থেকে এ ভাতা পাচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে এ কে এম সামসুল আলমের কাছে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হলে (০১৭১০২৮০৫৫৭) তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।