শতবর্ষী গাছ কেটে চলছে গণপূর্তের প্রকৌশলীদের বাসভবন নির্মাণ

জামালপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র বসাক পাড়ায় শতাধিক বনজ-ফলদ গাছ কেটে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর জন্য বাসভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। কাটার তালিকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি শতবর্ষী গাছ। তবে দীর্ঘদিন পানি জমে গাছগুলো মারা যাওয়ায় কেটে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানায়, এখানে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর একটি পরিত্যক্ত বাংলো ছিলো। জায়গাটি অন্যান্য স্থানের তুলনায় নিচু থাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে সব গাছই মারা যায়। পরে মরা গাছগুলো কেটে জায়গাটি ভরাট করে কর্মকর্তাদের থাকার উপযোগী করে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এখানে আবারও সবুজায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তারা।

সরজমিনে দেখা যায়, প্রকৌশলীদের বাসভবন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে অধিকাংশ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কিছু মরা গাছ এখনো দাঁড়িয়ে আছে। সেগুলোও কাটার প্রক্রিয়া চলছে। তবে হঠাৎ করে এতগুলো গাছ মারা যাওয়ায় পর কেটে ফেলায় এলাকায় তৈরি হয়েছে নানান কৌতূহল।

স্থানীয়রা জানান, শহরের অক্সিজেন ব্যাংক গাছগুলো। এখানে প্রায় ৬-৭টি শতবর্ষী গাছও ছিলো। অনেকে ব্রিটিশ আমল থেকে গাছগুলো দেখে আসছেন। গাছের আশপাশে বেশ কিছু জলাশয় ছিল। এগুলো বালি দিয়ে ভরাট করার ফলেই গাছের গোড়ায় বালি যাওয়ায় গাছগুলো মারা যায়।

এদিকে হঠাৎ করে গাছগুলো একসঙ্গে রা যাওয়ার পর কেটে ফেলাকে পরিবেশের বিপর্যয় বলে মনে করেছেন পরিবেশবাদীরাও।

এ বিষয়ে জেলা পরিবেশবাদী আন্দোলনের নেতা জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, দেড় বছর আগেও জায়গাটি সবুজে ঘেরা ছিলো। হঠাৎ করে এতগুলো গাছ কীভাবে মারা গেলো সেটা বোধগম্য নয়। এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে এ বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার চিন্তা করছি।

গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আশরাফুল আওয়াল রানা জানান, নতুন যোগদান করেছি। এরপর থেকে দেখে আসছি এখানে একটি পরিত্যক্ত বাংলো। আশপাশের গাছগুলো মরা। তাই দরপত্র আহবান করে গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেন, জায়গাটি নিচু হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এখানে থাকা অধিকাংশ গাছ মারা যায়। তাই গাছগুলো কেটে বসবাসের উপযোগী করে আবার নতুন করে গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটুস লরেন্স চিরান জানান, যেহেতু এটি গণপূর্ত বিভাগের জায়গা সেহেতু তারা জেলার কোনো কমিটি দিয়ে অনুমোদন করে নিয়েছে কী-না সে বিষয়ে আমার জানা নেই।

জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান মোবাইলে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানলাম। যেহেতু জায়গাটি গণপূর্ত বিভাগের তাই এ বিষয়ে কোনো অনুমোদন আছে কী-না সে বিষয়ে জেনে তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share this post

scroll to top