জবি ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত; ক্যাম্পাসে বড় সংঘর্ষের আশঙ্কা

সংঘর্ষের কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করে এই ঘটনায় তদন্ত কমটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এই নির্দেশনার পর থেকে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সকল কার্যক্রম বন্ধ করে। তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ করলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার আগেই কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর অনুসারী হিসাবে দাবি করে দুটি গ্রুপ ক্যাম্পাসে নিয়মিত শোডাউন দিয়ে যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুসারী দুটি গ্রুপ ক্যাম্পাসে তাদের উপস্থিতি শুরু করলে তাদের দলে ভীড় জমাচ্ছেন ক্যাম্পাস ও আশেপাশে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রশ্নফাঁস এবং দলীয় বিশৃঙ্খলার দায়ে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতারা। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুসারী দুটি গ্রুপের একাধিক নেতা দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশেই তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান শুরু করছেন।

এদিকে ক্যাম্পাসে নতুন উপগ্রুপ কয়েকটির নিয়মিত মহড়া ও শোডাউনে ক্যাম্পাসে আবার বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলেছন যারা শোডাউন দিচ্ছেন তারা সামনের কমিটির পদপ্রত্যাশী ভেবে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, যেহেতু জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তাই ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীরা মনে করছেন তাদের নেতা হতে হবে। এই সুবাদে ক্যাম্পাসে তারা তাদের নিজেদের অবস্থান জানান দেয়ার চেষ্টা করছে।

জানা যায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারী শাখা ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের জের ধরে ক্যাম্পাসে সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় সংসদ। এরপর গত মঙ্গলবার সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অনুসারী দাবি করা একটি গ্রুপ ও বুধবার সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের নামে আরেকটি গ্রুপ ক্যাম্পাসে মহড়া দেয়। যার নেতৃত্বে থাকা আশরাফুল আলম জবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ পাওয়ার পরপরই স্বেচ্ছায় অব্যহতি নেয়।

যুগ্ন সম্পাদক হোসনে মোবারক রিশাত ও মশিউর রহমান লিজনকে চাঁদাবাজি ও ব্যবসায়ী মারধরের দায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও জাকির হোসেনের কমিটি সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে।

জবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক নাহিদ পারভেজ বর্তমান কমিটির শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু শীর্ষ পদ না পেয়ে তিনি ক্যাম্পাসের রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্ন ফাঁস ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি জালিয়াতির দায়ে ডিবি পুলিশের হাতে আটক এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হওয়া শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকিব বিন বারী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর সাথে দেখা করে আবার শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে থেকে সক্রিয় হচ্ছেন।

এছাড়া ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের কয়েকজন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের কর্মীদের নতুন দুই গ্রুপের সাথে নিয়মিত শোডাউন দিতে দেখা যাচ্ছে।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত হওয়ার পরে কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার গুঞ্জনে নতুন গ্রুপের মহড়ার ঘটনায় ক্যাম্পাসে আবার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীরা বড় সংঘর্ষের আশংকায় ক্যাম্পাস আসা বন্ধ করে দিচ্ছে।

জবি ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। বেশ আগ থেকে একটি চক্র ক্যাম্পাসে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। তারা যদি কেন্দ্রীয় সংগঠনের নাম ভাঙ্গায় তাদের ব্যবস্থাও কেন্দ্রীয় সংগঠন করবে।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, ক্যাম্পাসে আমাদের কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা শোডাউন দিচ্ছে তাদের অনেকেই বহিস্কৃত। এখন ক্যাম্পাসে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে তার দায়ভার আমাদের না।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top