চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত মাহাদী জে আকিবকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। মাথায় গুরুতর চোট পাওয়া এমবিবিএস ৬২তম ব্যাচের এই ছাত্র এখন চমেক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. রঞ্জন কুমার নাথ জানান, আকিবের চিকিৎসার জন্য নিউরোসার্জারি, নিউরোলজি ও অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাদের তত্ত্বাবধানে শনিবার আকিবের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
গতকাল আইসিইউতে গিয়ে দেখা যায়, আকিব নিথর হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে খুলির একটি অংশ খুলে ফেলা হয়েছে। সাদা ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়ে সেখানে কলম দিয়ে লিখে রাখা হয়েছে, ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না।’ নিচে একটা বিপজ্জনক চিহ্নও এঁকে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় আকিবের পরিবারের কোনো সদস্য উপস্থিত না থাকায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে চমেক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ায়। এর মধ্যে একটি গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও অন্য গ্রুপটি চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। আকিব শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের গ্রুপে ছিলেন বলে কলেজ সূত্রগুলো জানিয়েছে।
নওফেলের অনুসারী গ্রুপের ইমন সিকদার বলেন, চমেক হাসপাতালের পাশে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে আকিবের ওপর হামলা করে নাছির গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মীরা। লাঠি ও লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়।
আকিবের মাথায় অস্ত্রোপচার করা নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, তার খুলির হাড় ভেঙে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য চমেক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের কর্মী তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছেন। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান জানান, মামলায় উল্লেখ করা ১৬ জন আসামির মধ্যে গতকাল দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।