মিয়ানমার থেকে আর কোন রোহিঙ্গা যেন প্রবেশ না করতে পারে, সেজন্য সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ। এই অবস্থায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর শুক্রবার একটি বিবৃতিতে বাংলাদেশকে উদৃত করে বলেছে, মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসতে চায় তাদেরকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দিন।
বিবৃতিতে রয়টার্সের একটি রিপোর্টের সূত্র দিয়ে বলা হয়, কয়েকদিন আগে মিয়ানমারের সামরিক ও জাতিগত রাখাইন বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই চলাকালে পালিয়ে আসা ১৩৬ জনের একটি দল বাংলাদেশের বান্দরবন জেলার নিকবর্তী একটি জঙ্গলে অবস্থান করছেন।
ইউএনএইচসিআর বিবৃতির মাধ্যমে মিয়ানমারে সম্প্রতি শুরু হওয়া সহিংসতার কারণে দেশটিতে যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে তার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা এমন বিপর্যয় পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানায়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন ও চিন প্রদেশে নতুন করে সহিংসতা শুরু হলে গত কয়েক দিনে বান্দরবানের সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের প্রায় দেড়শ’নাগরিক বাংলাদেশে এসেছে। নতুন করে আসা এসব মানুষ দেশটির বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বলে জানা গেছে।
জেনেভায় অবস্থিত সদর দফতরে সংস্থাটির মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিস বলেন, ‘মিয়ানমারের ওসব রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা শুরু ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সহিংসতার কারণে অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে শুরু হওয়া সহিংসতার কারণে দেশের ভেতরে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে কিংবা ভয়ে দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয়ের জন্য যাচ্ছেন অনেকে। আর এ কারণে যে মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন।’
সংস্থাটির মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেসিস বাংলাদেশের উদ্দেশে বলেন, ‘মিয়ানমারে শুরু হওয়া সহিংসতার কারণে যেসব মানুষ আশ্রয়ের জন্য যাচ্ছে তাদেরকে প্রবেশের অনুমতি দিতে বাংলাদেশ সরকারকে সব রকমের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আমরা।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান শুরু করলে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে আসা বৌদ্ধদের নতুন করে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মিয়ানমার সংলগ্ন সীমান্ত প্রায় বন্ধ করে দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।