বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে এবং আগের সব শর্ত (বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিতে হবে) বহাল রেখে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। আজ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার আমাদের কাছে আবেদন করেছিলেন। আমরা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার মুক্তির মেয়াদ চতুর্থ দফায় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘তিনি বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেবেন। বিদেশে যেতে পারবেন না। এর সঙ্গে আগে যেসব শর্ত ছিল, সেসব শর্ত বহাল থাকবে। ’
খালেদা জিয়ার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা রয়েছে। এর মধ্যে গত এপ্রিলে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রাক্ত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন বিএনপি চেয়ারপারসন। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর তার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
এই অবস্থায় খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে চলতি মাসের শুরুর দিকে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মতামতের জন্য আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আবেদনের বিষয়ে মতামত জানিয়ে দেয় আইন মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দী ছিলেন। প্রথমে তাকে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হলেও পরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
স্বাস্থ্যগত অবস্থার অবনতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারের পক্ষ থেকে এর আগে দুবার জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু দুবারই তা নাকচ হয়ে যায়।
২৫ মাস কারাভোগের পর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত বছরের ২৫ মার্চ ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার দণ্ড শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হয়। এরপর আবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মার্চে তৃতীয় দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৬ মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করা হয়। চলতি সেপ্টেম্বরেই সেই মেয়াদ শেষে চতুর্থ দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হলো।