রাখাইন রাজ্যে এবার সামরিক ঘাঁটি বানাচ্ছে মিয়ানমার। অঞ্চলটি থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে সেখানে সেনা ঘাঁটি বানানোর খবর পাওয়া গেছে। আর এর ফলে রোহিঙ্গাদের সেখানে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে নতুন আশঙ্কা যুক্ত হয়েছে।
রাখাইনে সেনা ঘাঁটি নির্মার্ণের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসঙ্ঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি। শুক্রবার তিনি বলেন, আমি শুনেছি ওই সমগ্র এলাকা জুড়ে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে সেনাবাহিনী। এমন তথ্যও পেয়েছি যে, বেসামরিক নাগরিকরা গ্রামগুলোতে সেনা সদস্যদের দেখেছেন এবং গুলির শব্দও শুনেছেন।
নিউ ইয়র্কে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন(এফআরসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে ধারণকৃত বক্তৃতায় একথা বলেন ইয়াংহি লি। বক্তৃতায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য এখনো মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা নিধন এখনই বন্ধ করতে হবে। গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও পারস্পারিক সহযোগিতা পরিস্থিতি ভঙ্গুর সেখানে। ধর্মীয় গোষ্ঠিগুলোর মধ্যেও বিভক্তি রয়েছে। জাতিসঙ্গ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।’
জাতিসঙ্ঘের এই বিশেষ দূত বরেন, এখন পরিস্থিতি চলছে তাতে যে কোন সময় আবার সঙ্ঘাত শুরু হতে পারে। ইতোমধ্যেই দেড় লাখের বেশি লোক অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু হিসেবে বসবাস করছে।
সারা বিশ্ব থেকে মানবাধিকার কর্মী ও স্কলারদের সমাবেশ ঘটেছে এফআরসির এই দুই দিন ব্যাপী সম্মেলনে। তারা মানবতার বিরুদ্ধে অপারধ সংঘটনের দায়ে মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তৃণমূল পর্যায় থেকে সতেচনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে এফআরসি।
ইয়াংহি লি বলেন, মুসলিম সংখ্যালঘুদের জাতিগত নিধনের অপরাধে মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহী করতে হবে। আর এরপর বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনতে হবে, যেটি সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।
শুধুমাত্র বাংলাদেশেরই গত এক বছরে আশ্রয় নিয়েছে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ২০১২ সাল থেকেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলছে রোহিঙ্গা নিধন। ২০১৭ সালে এই নিধন অভিযানে নামে সরাসরি দেশটির সেনাবাহিনী। গণহত্যা চালানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। যারা প্রাণে বাঁচতে পেরেছেন, তারা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশ। কিছু রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে ভারতসহ প্রতিবেশী আরো কয়েকটি দেশে।