২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এরপর তা বিশ্বের ২২০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রায় স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়েছিল চীন। কিন্তু ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কাছে আবারো নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে তাদের। ভেস্তে যাচ্ছে সংক্রমণ ঠেকানোর একাধিক পরিকল্পনা।
ইতোমধ্যে চীনের বেশ কিছু শহরে গণপরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উহান শহরের সব বাসিন্দার করোনা পরীক্ষা করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের (এনএইচসি) দৈনিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে এক হাজারেরও বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশটিতে। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় ৪৭ কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় এনেছে দেশটি।
গত ২০ জুলাই থেকে চীনের ১২টির বেশি শহরে করোনার ডেলটা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসনকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার দিকে কঠোর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সব রকমের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও কঠোর লকডাউন, গণহারে করোনা পরীক্ষা, কোয়ারেন্টিন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ সরকারের নেয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ব্যর্থ কর্মকর্তারা এই শাস্তির মুখে পড়েছেন।
দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির ‘সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন’ জানিয়েছে, এই ঘটনায় জিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী নানজিংয়ের ১৫ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। নানজিং লুকো ইন্টরন্যাশনাল এয়ারপোর্টির মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে কর্মরত তিনজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত বছর প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ‘জিরো-কোভিড’ কৌশল অনুসরণ করে আসছে চীন। কিন্তু করোনাভাইরাসের ডেলটা ভেরিয়েন্টকে দেশটির জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সোমবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের দেওয়া তথ্যমতে, রবিবার চীনের মূল ভূখণ্ডে নতুন ১২৫ রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যাদের ৯৪ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। এর আগের দিন শনিবার ৯৬ শনাক্ত রোগীর মধ্যে ৮১ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছিলেন। দুই ক্ষেত্রেই বাকিরা বিদেশ থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।