পাথরঘাটায় মা-মেয়ের মাটিচাপা মরদেহ উদ্ধার

পারিবারিক কলহের জেরে বরগুনার পাথরঘাটায় স্ত্রী সুমাইয়া (১৮) ও মেয়ে সামিরা আক্তার জুঁইকে (৯ মাস) হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামী শাহিন মুন্সীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে পালাতক রয়েছেন সাহিন ।

পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাতেমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক শাহিনের মা শাহিনুর বেগম (৪০), নানি জাহানারা বেগম (৫৫) ও ফুফাতো ভাই ইমাম হোসেনকে (২২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (০৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী খালের পাড় থেকে মাটি খুঁড়ে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাথরঘাটা সার্কেল তোফায়েল হোসেন সরকার।

ঘাতক সাহিন মুন্সী উপজেলার পূর্ব হাতেমপুর গ্রামের খলিলুর রহমান মুন্সীর ছেলে।

স্থানীয় রাজ্জাক বাদশাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাহিন ও সুমাইয়ার মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। বিয়ের আগেই তাদের অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের কারণে বাচ্চার জন্ম হয়। এ নিয়ে পাঁচ মাস কারাভোগের পর আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলতে থাকে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে।

তিনি আরো জানান, গত বুধবার (৩০ জুন) দুপুরে সুমাইয়ার বাবার বাড়িতে তাদের দাওয়াত ছিল। কিন্তু সাহিন সেখানে যাননি। দুপুরে দাওয়াত খেয়ে সুমাইয়া তার স্বামীর বাড়িতে আসার পর থেকেই নিখোঁজ হন। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার থানা পুলিশকে জানালে তারাও বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নেয়। এরপর থেকেই স্বামী সাহিন লাপাত্তা হয়ে যায়। এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে।

শুক্রবার রাতে স্থানীয়দের তথ্যমতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাহিনের মা এবং নানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোনো তথ্য না পাওয়ায় দুই দিনের মধ্যে শিশুকন্যাসহ পুত্রবধূকে খুঁজে আনার জন্য তাদের বলা হয়। এলাকাবাসীকেও অনুসন্ধান করতে বলে হয়।
পরে শনিবার সকালে সরকার বাড়ির পাশের মাটি খুঁড়ে মা ও শিশু কন্যার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে সুমাইয়ার বাবা মো. রিপন বলেন, বুধবার আমাদের বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে শ্বশুরবাড়িতে আসার পরে আর কোনো খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি মেয়ে এবং নাতনির। সাহিনই আমার মেয়ে ও নাতিকে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়েছে। শাশুড়ি ও স্বামী আমার মেয়েকে নির্যাতন করত একবার হাতে সুই ঢুকিয়ে নির্যাতন করেছে শাশুড়ি।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার জানান, শনিবার সকালে স্থানীয়রা সাহিনের বাড়ির পাশে একটি নতুন গর্ত দেখে থানায় খবর দেয়। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে দড়ি দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Share this post

scroll to top