চট্টগ্রাম নগরীতে গার্মেন্টেসে কাজ করা এক পোশাককর্মীকে চলন্তবাসে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই নারীকে আরো তিনবার গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় মিরসরাই থানা পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করেছে। ধর্ষণের সাথে জড়িত আরো কয়েকজনকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলো-
সীতাকুন্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকার মো: দুলালের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৩), বাঁশবাড়ীয়া এলাকার মো: ইয়াছিনের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (১৮), মুরাদপুর এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে রায়হান উদ্দিন রানা (২০), উত্তর ইদিলপুর এলাকার মো: নুর নবীর ছেলে মো: বেলাল হোসেন (২৩), শীবপুর এলাকার মো: সালামত উল্লাহর ছেলে মো: ইসমাঈল (৩২) এবং মিরসরাই উপজেলার মধ্যম কুরুয়া এলাকার মো: জেবল হোসেনের ছেলে মো. সাগর (২২)।
মিরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো: কামাল হোসেন বলেন, গত ২৩ জুন বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় পোশাককর্মী চন্দাকে (ছদ্মনাম) (২২) তার পরিচিত সীতাকুন্ডের চাকা পরিবহনের বাসচালক আশরাফুল ইসলাম (২৩) প্রকাশ আল আমিন চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার আসার জন্য বলেন। সেখান থেকে চন্দাকে আল আমিন বাসে করে সীতাকুন্ড নিয়ে আসেন। এ সময় সীতাকুন্ডে বাস থেকে সব যাত্রী নামিয়ে দিলেও চন্দ্রাকে তারা নামতে দেয়নি। আল আমিন ও তার সহকারী (হেলপার) শাহাদাৎ চন্দ্রাকে সীতাকুন্ডের জুটমিল এলাকায় নিয়ে বাসের মধ্যে ধর্ষণ করে। পরে তারা চন্দ্রাকে জুটমিল এলাকায় বাস থেকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে চন্দ্রা তার পূর্ব পরিচিত রায়হান উদ্দিন রানাকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। রানা তাকে সীতাকুন্ড আসার জন্য বলে। চন্দ্রা সীতাকুন্ড আসার জন্য বাসে উঠলে ওই বাসের ড্রাইভার ইসমাঈল ও তার সহকারী (অজ্ঞাত) রাত প্রায় সাড়ে ১১টায় ওই বাসে তাকে আবার ধর্ষণ করে সীতাকুন্ড ফেলে চলে যায়। পরে রায়হান উদ্দিন রানা সীতাকুন্ড এসে চন্দ্রার সাথে দেখা করে তার বন্ধু সাগর ও বেলালসহ তাকে সীতাকুন্ড থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৪টায় মিরসরাইয়ের সাহেরখালী এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে চন্দ্রাকে আবার ধর্ষণ করেন সাগর, বেলালসহ আরো কয়েকজন। পরে রানা ও তার সহপাঠিরা চন্দ্রার কাছে থাকা নগদ দুই হাজার টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে তাকে রেখে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, চন্দ্রা বৃহস্পতিবার সকালে মিরসরাইয়ের নিজামপুর এলাকায় আসে। পরে বাসে করে সীতাকুন্ড থানায় গিয়ে ধর্ষণের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়। গণধর্ষণের ঘটনা মিরসরাই থানা এলাকায় হওয়ায় সীতাকুন্ড থানা অভিযোগটি মিরসরাই থানায় হস্তান্তর করে।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মিরসরাই থানায় গণধর্ষনের বিষয়ে মামলা করেন চন্দ্রা। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সীতাকুন্ড উপজেলার জোড়াআমতল, কুমিরা, সীতাকুন্ড পৌরসভা ও মিরসরাইয়ের নিজামপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় আসামিকে আটক করে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় মিরসরাই থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করেছে।
আসামিদের আটকের বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই) সার্কেল, সহকারী পুলিশ সুপার (সীতাকুন্ড) সার্কেল, মিরসরাই থানা ও সীতাকুন্ড থানা পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছেন।