আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের রেজুলেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিমতীরে ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপন অব্যাহত রাখার প্রতিবাদ জানিয়ে তা দ্রুত বন্ধ করতে বলেছে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে এসব এলাকায় বসতি স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরাইলকে অভিযুক্ত করে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ ইসরাইলের প্রতি এ আহ্বান জানায়। খবর আরব নিউজের।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষ সমন্বয়কারী টর ওয়েইনসল্যান্ড ২০১৬ সালের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। যেখানে বলা হয়েছে— এ ধরনের অবৈধ বসতিগুলোর ‘কোনো আইনি ভিত্তি নেই’।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে নিরাপত্তা পরিষদে টর ওয়েইনসল্যান্ড বলেন, পশ্চিমতীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধ করতে হবে। কেননা, এ দুটি অঞ্চল ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।
ওয়েইনসল্যান্ড বলেন, আমি আবার বলতে চাই— ইসরাইলি বসতি স্থাপন জাতিসংঘের রেজুলেশন এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তিনি আরও বলেন, দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এবং ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এ ধরনের কাজগুলো মূল প্রতিবন্ধক।
সব ধরনের অবৈধ বসতি স্থাপন দ্রুত বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের এ দূত বলেন, অবৈধ বসতি স্থাপন প্রক্রিয়া দ্রুতই বন্ধ হওয়া উচিত।
জাতিসংঘের মহাসচিব এবং মধ্যপ্রাচ্যে জাতিসংঘের দূত টর ওয়েইনসল্যান্ড উভয়েই ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, যেন তারা ফিলিস্তিনিদের ঘর ধ্বংস না করে এবং তাদের বাস্তুচ্যুত না করে।
জাতিসংঘের মহাসচিব এবং সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত পরিষ্কার করে জানিয়েছে, সাড়ে চার বছর হয়ে গেলেও রেজুলেশনের কোনো বিষয়ই মানা হয়নি।
ওয়েইনসল্যান্ড ওই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সব পক্ষকে সাম্প্রতিক ‘যুদ্ধবিরতি’ মেনে চলার আহ্বান জানান।
নিরাপত্তা পরিষদকে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে জানানোর আগে ওয়েইনসল্যান্ড দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এবং ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আশায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিডকে শুভেচ্ছা জানান।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস জানান, মার্চ থেকে জুনের মধ্যে গাজা, পশ্চিমতীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে অনুষ্ঠিত অসংখ্য বিক্ষোভে হামলা চালায় ইসরাইলি বর্বর সেনাবাহিনী। নির্বিচারে গ্রেফতার করা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের। এ সময়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে অহরহ। ইসরাইল গাজায় বিমান হামলা-বোমা হামলাও চালিয়েছে। এসব ঘটনায় ২৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪২ জন নারী এবং ৭৩ জন শিশু। আর আহত হয়েছেন ১০ হাজার ১৪৯ জন।
গুতেরেস আরও বলেন, এ সময়ের মধ্যে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ৯০ সদস্য এবং ৮৫৭ ইসরাইলি আহত হয়েছেন ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং রকেট হামলায়।