পাকিস্তানে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার জন্য নারীদের ‘স্বল্পবসন’কে দায়ী করে দেওয়া বক্তব্যের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইমরান খানের এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে মুসলিম লীগের (এন) ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ বলেছেন, ইমরান খানের কথায় অপরাধীর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তার হাস্যকর ও অপরিপক্ব চিন্তা জাতির সামনে প্রকাশ পেয়ে গেল।
বুধবার ইসলামাবাদে এক সমাবেশে মরিয়ম নওয়াজ এসব কথা বলেন।
তিনি ইমরানের প্রতি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েন— তা হলে ছোট ছোট শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে কেন? তারাও কি পোশাকের কারণে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে?
মরিয়ম মনে করেন, যে কোনো ঘটনায় ভুক্তভোগীকে দায়ী করার মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, এমন মন্তব্যের কারণে ইমরান খানের উচিত ক্ষমা চাওয়া।
মরিয়মের অভিযোগ— প্রধানমন্ত্রী ধর্ষণের শিকার নারীদের নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। ধর্ষণের শিকার তরুণীদের বাবা-মায়ের প্রতি এটি ইমরানের উপহাস।
ধর্ষণের জন্য নারীদের দায়ী করা হলে তারা লজ্জিত হবেন।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, ‘যদি নারীরা স্বল্পবসন পরেন, তা হলে পুরুষরা রোবট না হলে সেটি তাদের ওপর প্রভাব ফেলে। এটি খুব সাধারণ ব্যাপার।’
ইরমান খানের এ মন্তব্যেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই মন্তব্যের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। পাকিস্তানের সাংবাদিকরাও দেশের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা করেছেন।
এর মাসখানেক আগেও পাকিস্তানে বাড়তে থাকা ধর্ষণের ঘটনার কারণ হিসেবে অশালীনতাকে দায়ী করেছিলেন ইমরান। এপ্রিলে ইমরানের সেই মন্তব্যের প্রতিবাদে লিখিতভাবে তার ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল পাক নাগরিকরদের একটি অংশ।
পাকিস্তানের প্রকাশিত সরকারি তথ্যানুযায়ী দেশটিতে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গত ছয় বছরে এজাতীয় ২২ হাজার মামলা করা হয়েছে। তবে পাকিস্তানে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার অত্যন্ত কম। পরিসংখ্যান বলছে, মোট ঘটনার শূন্য দশমিক ৩ শতাংশকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়ে থাকে, যা অস্বাভাবিক।