ইসরাইলের ১১ দিনের হামলায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা। যুদ্ধবিরতির পর এখন চলছে উদ্ধারকাজ। ইসরাইলি হামলায় আরো অনেকের মতো আবু ইয়াহিয়ার বাড়িটিও বিধ্বস্ত হয়েছে। আবু ইয়াহিয়া তার বিধ্বস্ত বাড়ির কাছে একটি জলপাই গাছের নিচে বসে আছেন।
এবারের ইসরাইলি হামলা শুরু হয়েছে হামাসের রকেট নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে। সূত্রপাত্র হয়েছিল পূর্ব জেরুসালেমের শেখ জাররাহ এলাকায় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে। এর রেশ ধরে আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী। আল্টিমেটাম দেয় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাস। আল্টিমেটামের সময় শেষ হয়ে গেলে রকেট নিক্ষেপ করে হামাস। আর সাথে সাথে নেমে আসে ইসরাইলি আগ্রাসন।
অনেকেই মনে করতে পারে, হামাস যদি রকেট নিক্ষেপ না করত, তবে হয়তো ইসরাইল হামলা চালাত না। কিন্তু গাজার লোকজন কিন্তু তা মনে করে না। এই ইয়াহিয়ার কথাই ধরা যাক। ইসরাইলের বিরুদ্ধে বেশ ক্রুদ্ধ তিনি।
তিনি বলেন, আমার ৫০টি ছেলে থাকলে তাদের সবাইকে বলতাম, যাও- ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো।
তিনি এখন ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করছেন। তিনি কিন্তু দমে যাচ্ছেন না। রাতে তিনি এই ধ্বংসস্তুপের ওপরই ঘুমাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমার পরিবার আমাকে এই জায়গা ত্যাগ করতে বলেছে। কিন্তু আমি শুনিনি। এখানেই আমার বাড়ি।
এদিকে ইসরাইল ও গাজার মধ্যকার যুদ্ধবিরতি যাতে টিকে থাকে, তার চেষ্টা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও মিসর, জর্ডান ও অন্যান্য দেশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
গাজায় কিছু সাহায্যও আসছে। সেগুলো বণ্টন করা হচ্ছে।
ইসরাইলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৪৮ জন নিহত হয়েছে। অন্তত ছয় হাজার লোক তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন।
সূত্র : আল জাজিরা
পুলিশি পাহারায় মসজিদুল আকসায় ইহুদিদের প্রবেশ
ভারি অস্ত্রে সজ্জিত ইসরাইলি পুলিশের পাহারায় মসজিদুল আকসায় জোর করে প্রবেশ করেছে ইহুদি বসতিস্থাপনকারীরা। রোববার সকালে প্রায় এক শ’ ইহুদি পুলিশি পাহারায় মসজিদ চত্ত্বরে প্রবেশ করে।
এর আগে মসজিদে ফজরের নামাজের পর সমবেত মুসল্লিদের ওপর হামলা করে ইসরাইলি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা দিয়ে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, ইসরাইলি ইহুদিদের প্রবেশে জায়গা করে দিতে পুলিশ মুসল্লিদের ওপর ব্যাপক মারধর চালায়।
ওয়াফা আরো জানায়, এই সময় ছয় ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়।
এদিকে ইসরাইলি দৈনিক জেরুসালেম পোস্টের কাছে মসজিদুল আকসায় ইহুদিদের তীর্থ দর্শন বিষয়ক সংস্থা ‘কমিটি অব টেম্পল অর্গানাইজেশনস’ জানিয়েছে, মসজিদে প্রবেশ করা ইসরাইলি ইহুদিরা প্রার্থনা করেছেন।
কমিটি জানিয়েছে, মসজিদুল আকসায় প্রার্থনাকারী ইহুদিরা ‘ইসরাইলি নেতৃত্বের দৃষ্টি খুলে দেয়া এবং টেম্পল মাউন্টের মসজিদকে সৌদি আরব বা অন্য শান্তিকামী আরব দেশে স্থানান্তরের মাধ্যমে ইসরাইলে সন্ত্রাস প্রশমনের জন্য’ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পূর্ব জেরুসালেমের মসজিদুল আকসা ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদীনার মসজিদে নববীর পরই এই মসজিদকে মুসলমানরা মর্যাদা দেন।
অপরদিকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ হিসেবে পরিচিত এই স্থাপনাটি ইহুদিদের কাছেও পবিত্র স্থান। এই স্থানে ইহুদিরা তাদের প্রধান ধর্মীয় উপসনালয় থাকার দাবি করেন।
সূত্র : আলজাজিরা ও জেরুসালেম পোস্ট