গাজায় নিহতদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি শিশু

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় নিহতদের এক তৃতীয়াংশের বেশি শিশু। ইসরাইলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত ভবনগুলো থেকে শিশুদের লাশ বের করার সময় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আজ রোববার সপ্তম দিনের মতো ইসরাইল গাজায় বিমান হামলা চালায়। এই সাত দিনের মধ্যে আজকের হামলাই ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। গাজা পরিচালনাকারী সংগঠন হামাসও পাল্টা রকেট নিক্ষেপ করে জবাব দিয়ে যাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলি হামলায় এপর্যন্ত ১৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে নিহত শিশুর সংখ্যা ৫৫। আর নারী ৩৩ জন। আহত হয়েছে এক হাজারের বেশি। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি। আজ রোববার গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৪২ জন।
অন্যদিকে ইসরাইলে নিহত হয়েছে ১০ জন।

ইসরাইল এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক রকেট হামলার শিকার হয়েছে
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারই ইসরাইল সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রকেট হামলার শিকার হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল ওরি গর্ডিন বলেন, সোমবার লড়াই শুরু হওয়ার পর গাজা উপত্যকা থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে ইসরাইলের দিকে। এই সংখ্যাটি ২০১৯ সালের সংখ্যা এবং ২০০৬ সালে লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধের সংখ্যাটিও ছাড়িয়ে গেছে।

ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ ফ্রন্টের কমান্ডার গর্ডিন অতীত ও বর্তমানে কত রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে, তার গ্রাফিক চিত্র সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

গাজা উপত্যকায় প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সর্বোচ্চ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারসহ শীর্ষ নেতাদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইসরাইল। আজ জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাত নিয়ে আলোচনা হবে। এতে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাসও হতে পারে। ইসরাইল চাচ্ছে, যুদ্ধবিরতির আগে যত সম্ভব বেশি হামাস নেতাদের হত্যা করতে।

এবিসির খবরে এমনটাই মনে হচ্ছে। এতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির আগেই হামাসের যত বেশি ক্ষতি সম্ভব করতে চাচ্ছে ইসরাইল।

ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজায় সবচেয়ে সিনিয়র হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়া ও তার ভাই মোহাম্মদের বাড়িতে আঘাত হেনেছে। এছাড়া শনিবার তারা হামাসের রাজনৈতিক শাখার সিনিয়র নেতা খলিল আল-হায়ের বাড়িও ধ্বংস করেছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিদাই জিলবারম্যান দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে সিনওয়ার বাড়িতে আঘাত হানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, সিনওয়ার ভাইয়ের বাড়িও ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি হামাসের ‘লজিস্টিক অ্যান্ড পারসানাল’ বিভাগের দায়িত্বে।

গাজায় হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব এখন আত্মগোপনে রয়েছে। ফলে হামলার সময় তাদের বাড়িতে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া পালাক্রমে তুরস্ক ও কাতারে বাস করেন।

হামাস ও ইসলামিক জিহাদ স্বীকার করেছে, সোমবার থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলায় তাদের ২০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তবে ইসরাইল বলেছে, সংখ্যাটি অনেক বেশি।

সূত্র : আল জাজিরা, এবিসি ও ডেইলি মেইল

Share this post

scroll to top