বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরটি শুরুর দিকে না জমলেও শেষের দিকে জমে উঠেছে। চট্টগ্রাম পর্বে রানের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন ব্যাটসম্যানরা। এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত চারটি সেঞ্চুরি হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনটিই হয়েছে চট্টগ্রামের মাটিতে। সর্বশেষ গতকাল খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের এভিন লুইস।
তবে যে চারটি সেঞ্চুরি হয়েছে তার সব কয়টিই বিদেশীদের দখলে। গত ২১ জানুয়ারি কুমিল্লার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন রাজশাহী কিংসের লোরি ইভান্স।
২৫ জানুয়ারি চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন রংপুর রাইডার্সের আলেক্স হেলস ও রাইলি রুশো।
সব মিলিয়ে বিপিএলের এখন পর্যন্ত মোট ১৬টি সেঞ্চুরি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিক ক্যারিবীয়ান দানব ক্রিস গেইল। পাঁচটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ২০১৭ সালের বিপিএলেই করেছেন দুটি।
আর দ্বিতীয় স্থানে আছেন এভিন লুইস। তিনি সেঞ্চুরি করেছেন দুটি।
সেঞ্চুরিয়ান- স্কোর- বনাম- সাল
ক্রিস গেইল ১০১* বরিশাল-সিলেট ২০১২
ক্রিস গেইল ১১৬ বরিশাল-ঢাকা ২০১২
ডোয়াইন স্মিথ ১০৩* খুলনা-সিলেট ২০১২
আহমেদ শেহজাদ ১১৩* বরিশাল-রাজশাহী ২০১২
শাহরিয়ার নাফিস ১০২* খুলনা-রাজশাহী ২০১৩
আশরাফুল ১০৩* ঢাকা-খুলনা ২০১৩
ক্রিস গেইল ১১৪ ঢাকা-সিলেট ২০১৩
এভিন লুইস ১০১* বরিশাল-ঢাকা ২০১৫
সাব্বির রহমান ১২২ রাজশাহী-বরিশাল ২০১৬
ক্রিস গেইল ১২৬* রংপুর-খুলনা ২০১৭
জনসন চার্লস ১০৫* রংপুর-কুমিল্লা ২০১৭
ক্রিস গেইল ১৪৬* রংপুর-ঢাকা ২০১৭
লোরি ইভান্স ১০৪* রাজশাহী-কুমিল্লা ২০১৯
অ্যালেক্স হেলস ১০০ রংপুর-চট্টগ্রাম ২০১৯
রিলি রুশো ১০০* রংপুর-চট্টগ্রাম ২০১৯
এভিন লুইস ১০৯* কুমিল্লা-খুলনা ২০১৯
বিপিএলে সবচেয়ে বাজে বোলিং সাদ্দামের
এবারের বিপিএলে সবচেয়ে বাজে বোলিং খুলনা টাইটান্সের সাদ্দাম হোসেনের। এত দিন বেশি রান দেয়ার যে রেকর্ডটি ছিল আল-আমিন হোসেন ও মেহেদী হাসান রানার দখলে। এবার সেটি নিজের দখলে নিয়ে নিলেন সাদ্দাম।
চট্টগ্রামে গতকাল আল আমিন ও মেহেদীর বোলিং ছাপিয়ে গেছেন খুলনা টাইটান্সের পেসার মোহাম্মদ সাদ্দাম। কুমিল্লার বিপক্ষে ডানহাতি মিডিয়াম পেসার ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৫৯। এর আগে আল-আমিন ও মেহেদী হাসান রানা ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ৫৭ রান।
গতকালই জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন বলেছিলেন, চট্টগ্রামের রানপ্রসবা উইকেটে বোলিং করতে হবে বুদ্ধি খাটিয়ে। বোলিংয়ে থাকতে হবে বৈচিত্র্য। নয়তো ব্যাটসম্যানদের কড়া শাসনেই থাকতে হবে বোলারদের।
কিন্তু রুবেলের কথা মনে পছন্দ হয়নি সাদ্দামের। নিজের মতোই করলেন বোলিং। তার হতশ্রী বোলিংয়ে কুমিল্লা রানের পাহাড় গড়েছে। তার বোলিং স্পেলে ছিল ৯ ডট বল। বাকি ১৫ বলেই সাদ্দাম খরচ করেছেন ৫৯ রান! ২ চার ও ৬ ছক্কা হজম করেন। ওয়াইড দিয়েছেন ৬টি, নো বল একটি। সেঞ্চুরিয়ান এভিন লুইসের আক্রমণে সবচেয়ে বেশি পুড়েছেন সাদ্দাম। তার বলে ৬টি ছক্কাই মেরেছেন লুইস।
অথচ বোলিংয়ের শুরুটা খারাপ ছিল তার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে মাত্র ৫ রান দেন। চতুর্থ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে আটকে রাখেন রানের চাকা। ব্যয় করেন মাত্র ৮ রান। পাওয়ার প্লেতে দুই ওভার বোলিংয়ে ১৩ রান খরচ করে অধিনায়কের আস্থা অর্জন করেন সাদ্দাম। কিন্তু শেষ দুই ওভারে সব এলোমেলো করে দেন তরুণ এই পেসার।
১৪তম ওভারে তাকে বোলিংয়ে ফিরিয়ে আনেন মাহমুদুল্লাহ। হাফ সেঞ্চুরির স্বাদ পাওয়ার লুইস তখন বড় রানের ক্ষুধায় মগ্ন। সাদ্দামকে পেয়ে জ্বলে ওঠেন এই ক্যারিবীয় ওপেনার। ওই ওভারে চার ছক্কাসহ সাদ্দামকে দিতে হয় ২৮ রান। শেষ ওভারে সাদ্দামকে ছক্কায় উড়িয়ে বিপিএলে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন লুইস। পরের বলে আবার ছক্কা। শেষ ওভারে ১৮ রান দিয়ে বাজে বোলিংয়ের অনাকাক্সিক্ষত রেকর্ড নিজের নামের পাশে যুক্ত করেন সাদ্দাম।