অনিয়ন্ত্রিত গতিতে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে চীনের বৃহত্তম রকেট লং মার্চ ৫-বি এর ছুটে আসা টুকরো। এটি লম্বায় ১০০ ফুট আর ওজন ২১ টন। আগামী ১০ মে এটি পৃথিবীর বুকে আছরে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মহাকাশে খুব গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের জন্যই এই শক্তিশালী রকেট বানায় চীনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
পৃথিবীর কক্ষপথে নিজের দেশের একটি মহাকাশ স্টেশন বানাতে চলেছে চীন। প্রকল্পের নাম- ‘তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশন’। তা উৎক্ষেপণের জন্য কিছুদিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। ওই মহাকাশ স্টেশনের একটি ‘মডিউল’ (অংশ) পরীক্ষামূলকভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাতে গত ২৮ এপ্রিল ‘লং মার্চ ৫বি রকেটের’ উৎক্ষেপণ করেছিল চীনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
‘স্পেসনিউজ’ জানাচ্ছে, চীনা রকেটটি সফলভাবে মহাকাশ স্টেশনের ‘মডিউল’টিকে কক্ষপথে স্থাপন করতে পারলেও নিজেকে আর গ্রাউন্ড স্টেশনের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। ঘুরে চলেছে পৃথিবীর কক্ষপথে। তবে তার ভেতরের ১০০ ফুট লম্বা (৩০ মিটার) অংশটি রকেট থেকে আলাদা হয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে দিন-কয়েকের মধ্যেই ঢুকে পড়তে চলেছে। রাডারে তা ধরাও পড়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, লং মার্চ ৫-বি রকেটটি এখন পৃথিবীর কক্ষপথে ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার বেগে ছুটছে। কখনো ১৭০ আবার কখনো ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিচে নেমে আসছে এটি। তবে দিনে দিনে এটি আরও নামবে। আপাতত এর গতিপথের মধ্যে পড়েছে নিউ ইয়র্ক, মাদ্রিদ, বেইজিং, দক্ষিণ চিলি, ওয়েলিংটন, নিউ জিল্যান্ডসহ আরও কিছু স্থান। এই চলার পথে সামান্য এদিক ওদিক হলেই এর ল্যান্ডিং স্পট বদলে যেতে পারে।
আপাতত নিয়ন্ত্রণহীন রকেটটির গতিবেগ ও গতিপথ বিশ্লেষণ করে অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট সেন্টার অ্যাট হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জনাথন ম্যাকডোয়েল জানালেন, ১০ মে এটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। আর পৃথিবীর যেহেতু বেশিরভাগই সমুদ্র, তাই মহাসাগরে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে এটা পরিসংখ্যান মাত্র। বস্তুত ৩০ মিটার লম্বা ও ২১ টন ওজনের রকেটের টুকরোটি পড়তে পারে যেকোনও স্থানে। সময় ঘনিয়ে এলে আরও নিখুঁতভাবে বলা যাবে এর আছড়ে পড়ার স্থান।
ম্যাকডোয়েল বললেন, ১০ টনের বেশি ওজনের কোনও কিছু অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আমরা মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসতে দিতে পারি না। সেখানে লং মার্চ ৫-বি এর ছুটে আসা টুকরোটির ওজন ২১ টন!