আগামি ২ ফেব্রুয়ারি গণভবনে সংলাপ নয়, পার্টি হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘এটা একটা গার্ডেন পার্টি। জাস্ট ভিউ এক্সচেঞ্জ করতে পারেন তারা। প্লেজেন্টলি এক্সচেঞ্জটিই মূলত প্রোগ্রাম, আর একটু চা-টা খাবে একসঙ্গে। ফাঁকে ফাঁকে কথাবার্তাও বলা যাবে’।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে সব দলের সাথে নির্বাচনের আগে সংলাপ হয়েছে, সেই ৭৫টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ২ ফেব্রুয়ারি গণভবনে। এটা আনুষ্ঠানিক কোনো সংলাপ নয় উল্লেখ করেই তিনি বলেন, ‘শুভেচ্ছা বিনিময়ে করতে গিয়েও তো অনেক কথা বলা যায়’।
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির আহ্বানের প্রেক্ষাপটে এবার ভোটের আগে গত অক্টোবরে আকস্মিকভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের তিন দফায় আলোচনার সুযোগ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী; তাতে বিভিন্ন আশ্বাস পাওয়ার কথা জানিয়ে ভোটে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পর ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলে ফের রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকতে প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময়ের অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কথা বিএনপি নেতারা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘এটায় তারা কেন আসবেন না, সেটা তাদের ব্যাপার। আমরা তো তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের আমন্ত্রণ জানাতে পারি না’।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। ‘সব দেশেই তারা চিঠি লিখেছেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে তাতে তো কেউ সায় দেয়নি। সবাই নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচিত সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন’। বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি কত আসন পেয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, তাদের সংখ্যা কত সেটা আমরা দেখব না। তারা যদি যুক্তিসঙ্গত কোনো বিষয় সংসদে উত্থাপন করে, সেটা আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করব’।
সংসদে আনতে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলবেন কি না- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘সংসদে যোগ দেয়া গণতন্ত্রের অধিকার, কেন ফোন দেব। তিনি অধিকার বলে সংসদে আসবেন’। তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল কারও দয়ায় নির্বাচিত হননি। তিনি সংসদে না গেলে নিজেকে বঞ্চিত করবেন, ভোটারদের বঞ্চিত করবেন’।
বিএনপি জোট থেকে নির্বাচিত গণফোরামের নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান শপথ নিচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে খবর পাওয়ার কথা জানিয়ে তাদের স্বাগতও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
আগামী উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি না এলে তা গ্রহণযোগ্য হবে কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘তারা ভুল করবেন কি সঠিক করবেন, তা তাদের বিবেচনার বিষয়। নির্বাচনে অংশ নিলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে’। ‘বিএনপিকে ছাড়াই সংসদ শুরু হচ্ছে এমনটা নয়, বিএনপি নিজেই নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছে। বিএনপি যদি অংশ না নেয়, তাহলে আমরা কি তাদের জোর করে আনব? এটা কি সম্ভব?’
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোন দেশে একেবারে পারফেক্ট নির্বাচন হয়েছে? এটি কি কেউ দাবি করতে পারে। বাঘা বাঘা দেশে বড় বড় ইলেকশন নিয়ে কথা আছে’। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি গণভবনে যে অনুষ্ঠান হচ্ছে, তা সংলাপ না হলেও সেখানে কথা বলার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ফের সংলাপ নিয়ে আলোচনার মধ্যে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি গণভবনে আমন্ত্রণ পেয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ভোটের ফল প্রত্যাখ্যানকারী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি ফের সংলাপ চাইলে তা হচ্ছে না বলে আগেই জানিয়েছিলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।